নেতৃত্বগুণ এবং জনপ্রিয়তায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা। দলে তার বিকল্প নেই। তাই, ক্ষমতাসীন দলটির ২২তম জাতীয় সম্মেলনেও ডেলিগেট ও কাউন্সিলররা আস্থা রেখেছেন শেখ হাসিনার ওপর। দশমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। আর তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ওবায়দুল কাদের। এ নিয়ে তিনটি সম্মেলনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতৃত্ব অপরিবর্তিত থাকল।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে দুই নেতা নির্বাচিত হন।
এর আগে সকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন হয়। সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হয়। ওই সম্মেলনেও শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুক সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন। দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান তা সমর্থন করেন। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় শেখ হাসিনাকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন।
সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেন নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার। তা সমর্থন করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ। বিকল্প প্রস্তাব না থাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন টানা তৃতীয়বারের মতো ওবায়দুল কাদেরকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য:
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীতে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। আগের মতোই এ পদে আছেন-বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, কাজী জাফর উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি, পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, শাজাহান খান এমপি, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, কামরুল ইসলাম এমপি, সিমিন হোসেন রিমি। নতুনভাবে সভাপতিমণ্ডলীতে যুক্ত হয়েছেন মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তিনি কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হিসেবে ছিলেন। সভাপতিমণ্ডলী থেকে বাদ পড়েছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ, রমেশ চন্দ্র সেন এবং অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান। ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সভাপতিমণ্ডলীর দুটি পদ ফাঁকা আছে।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদেও তেমন একটা পরিবর্তন আসেনি। মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি, ডা. দীপু মনি এমপি, ড. হাছান মাহমুদ এমপি এবং আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
কোষাধ্যক্ষ পদে পরিবর্তন হয়নি। এ পদে আছেন এইচএন আশিকুর রহমান এমপি।
সম্পাদকমণ্ডলী:
সম্পাদকমণ্ডলীতে শ্রমবিষয়ক সম্পাদক, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং উপ-প্রচার সম্পাদকের পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে। এসব পদ পরবর্তী সময়ে পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।
অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা।
সাংগঠনিক সম্পাদক
সাংগঠনিক পদে আগের মতোই রয়েছেন আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম এমপি, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। বাদ পড়েছেন সাখাওয়াত হোসেন শফিক। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সুজিত রায় নন্দী।
উপ-সম্পাদক পদে অপরিবির্তত আছেন সায়েম খান।
কার্যনির্বাহী সদস্য : দলের পরবর্তী সভাপতিমণ্ডলীর সভায় নতুনভাবে কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হবে।
জাতীয় কমিটি:
আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ড. মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মির্জা এম এ জলিল, আকবর আলী মর্জি, ড. আনিসুল হক, জাহিদ মালিক স্বপন, অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, শাহজাহান কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুস, চন্দ্রীজগল পাল, শ্রী রমেশ চন্দ্র, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হারুনুর রশিদ এবং হাবিবুর রহমান সিরাজ।
সংসদীয় বোর্ড:
সংসদীয় বোর্ডও অনুমোদন হয়েছে সম্মেলনে। সংসদীয় বোর্ডের ৫ সদস্য মারা গেছেন। পরে সেগুলো পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। সংসদীয় বোর্ডের প্রধান হিসেবে নিয়ম অনুযায়ী থাকছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সদস্যরা হলেন- আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্লাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, ওবায়দুল কাদের, মো. রাশিদুল আলম এবং ড. দীপু মনি।
স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড:
শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, কাজী জাফর উল্লাহ, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, শ্রী রমেশ চন্দ্র সেন, ওবায়দুল কাদের, মো. রাশিদুল আলম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. আব্দুর রহমান, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ এবং ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ।
উপদেষ্টা পরিষদ:
আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ড. মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, রাজীউদ্দিন আহমেদ রাজু, ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, শ্রী সতীশ চন্দ্র রায়, অধ্যাপক ড. আব্দুল খালেক, অধ্যাপক ডা. রুহুল হক এমপি, কাজী আকরাম উদ্দীন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, ড. অনুপম সেন, অধ্যাপক ড. হামিদা বানু, অধ্যাপক ড. মো. হোসেন মনসুর, অধ্যাপক সুলতানা শফি, এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, অ্যাম্বাসেডর জমির, গোলাম মওলা নকশাবন্দি, ড. মির্জা এমএ জলিল, ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ মল্লিক, অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান খান, ড. গওহর রিজভী, অধ্যাপক খন্দকার বজললু হক, মো. রশিদুল আলম, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, কাজী সিরাজুল ইসলাম, চৌধুরী খালেকুজ্জামান, মোজাফফর হোসেন পল্টু, সালমান এফ রহমান, এনাম আহমেদ চৌধুরী, আতাউর রহমান, একেএম রহমাতুল্লাহ, মো. শাহাবুদ্দিন টিপু, অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, ড. শামসুল আলম, মতিউর রহমান খান, অ্যাডভোকেট জহিরুল হক, শ্রী রমেশ চন্দ্র সেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান, হারুনুর রশিদ এবং হাবিবুর রহমান সিরাজ।