পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হালিম হাওলাদারের সহধর্মিনী ও ভয়েস অব আমেরিকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি আমির খসরুর মা মোসাম্মাৎ সেতারা হালিমের (৭৪) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পাঁচ মাস পর বুধবার একই এলাকার সিআই পাড়া (কৃষ্ণচূড়া মোড়) থেকে প্রধান আসামি দিনমজুর শুক্কুর আলী হাওলাদারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারের পর ঘাতক শুক্কুর আলী হাওলাদার (৩৪) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মাত্র ৫ শ’ টাকার জন্য তিনি সেতারা বেগমকে গলায় স্যালাইনের পাইপ দিয়ে বেঁধে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করেন বলে জানান। শুক্কুর আলী ইন্দুরকানী উপজেলার চরগাজীরপুর গ্রামের বাসিন্দা হাবিব হাওলাদের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল হাসান জানান, শুক্কুর গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠানো হলে সে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. জাকারিয়া জানান, সেতারা হালিমের বাসায় শুক্কুর একদিন কাজ করে ৭ শ’ টাকার চুক্তিতে। কাজ শেষে তাকে ২ শ’ টাকা দেওয়া হয়।
সমিতির কিস্তি পরিশোধের জন্য শুক্কুর কয়েক দিন পর পাওনা ৫ শ’ টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়। পরদিন কিস্তি পরিশোধ করেতে না পারায় সমিতির লোকজন শুক্কুরের বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে।
শুক্কুর বাসায় ফেরার পর স্ত্রী তাকে এ ঘটনা জানালে সেদিনই সে প্রতিশোধ নিতে উদ্যত হয় এবং সেতারা হালিমের এক পরিচিত জনের সঙ্গে খুন করার পরিকল্পনা করে।
পরিচিতজনের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সেতারা হালিমের ঘরে ঢুকে যে মালামাল পাওয়া যাবে তা তারা দুজনে ভাগাভাগি করে নেবে-এমন পরিকল্পনাও হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার রাতে শুক্কুর ও পরিচিতজনকে নিয়ে সেতারা হালিমের ঘরে কলিং বেল বাজিয়ে প্রবেশ করে।
পরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায় স্যালাইনের পাইপ গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সেতারা হালিমকে। সেতারা হালিম নিজ ভবনের দোতলায় একা থাকতেন। হত্যা শেষে বাসায় থাকা স্বর্ণের গহনা ও নগদ টাকা নিয়ে পেছনের দরজা খুলে ঘাতকরা পালিয়ে যায়। তবে পুলিশ আসামি শুক্কুর আলীকে গ্রেফতার করতে পারলেও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সেতারা হালিমের পরিচিতজনকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।