ঝালকাঠির রাজাপুরে একটি ক্লিনিকের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারের (স্যাকমো) ভুল চিকিৎসায় শাহিনুর বেগম (৩৯) নামে এক রোগী পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ‘স্টেরয়েড ইনজেশন’ পুশ করায় দুই পায়ের টেন্ডোঅ্যাকাইলিজ নামক রগ ছিড়ে যাওয়ায় তিনি হাটতে পারছেন না। শাহিনুর উপজেলার পুখরিজানা গ্রামের অটোরিকশাচালক আফজাল মোল্লার স্ত্রী।
শাহিনুর বেগম অভিযোগ করেন, হাঁটু ও পায়ের পাতায় ব্যাথার জন্য চিকিৎসা নিতে প্রায় ৮ মাস আগে রাজাপুর সোহাগ ক্লিনিকের যান তিনি। সেখানে চিকিৎসক পরিচয়দানকারী উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার (স্যাকমো) আজম খান তাকে দুই সপ্তাহে ‘স্টেরয়েড’ নামক চারটি ইনজেকশন পুশ করেন। এতে তাঁর দুই পা ফুলে উঠে। তিনি আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে বরিশালের চিকিৎসক ফেরদৌস রায়হানকে দেখালে তিনি বলেন স্টেরয়েড ইনজেশন দেয়ার ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
পরবর্তীতে নিরুপায় হয়ে শাহিনুর বেগম ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাসিক সার্জারি ইনিস্টিটিউটে যান। সেখানের চিকিৎসকও তাকে স্টেরয়েড ইনজেশন দেওয়ায় দুই পায়ের টেন্ডোঅ্যাকাইলিজ নামক রগ দুটি ছিড়ে গেছে বলে জানান। এখন তাঁর চিকিৎসা করাতে সাত-আট লাখ টাকা প্রয়োজন। দরিদ্র শাহিনুর বেগম টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে বাড়িতে চলে আসেন। গত কয়েকদিন আগে দুই পা ফুলে প্রচন্ড যন্ত্রনায় ১ ফেব্রুয়ারি রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
অভিযোগের বিষয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্যাকমো আজম খান বলেন, কয়েক মাস আগের বিষয় তো কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবো না। কোন ওষুধেই এতোদিন অ্যাকশন থাকার কথা না। তাছাড়া এ বিষয়টি কেউ আমাকে আগে জানায়নি। যে কারনে না জেনে বা কাগজপত্র না দেখে কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল খায়ের রাসেল বলেন, শাহিনুর বেগমের চিকিৎসা চলছে। স্টেরয়েড ইনজেশন দেয়ায় দুই পায়ের টেন্ডোঅ্যাকাইলিজ নামক রগ ছিড়ে গেছে। তাঁর চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাকে উন্নত চিকিৎসা না দিলে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্যাকমো আজম খান কোন চিকিৎসক নন এবং স্টেরয়েড ইনজেশন তিনি লিখতে পারেন না। কিন্তু তিনি কিভাবে স্টেরয়েড ইনজেশন প্রয়োগ করলেন তা বোধগম্য নয়।