সোমবার , ২৭ মার্চ ২০১৭ | ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

সিলেটে জঙ্গি আস্তানা ‘মা, আমার কি হবে?’

প্রতিবেদক
alltimeBDnews24
মার্চ ২৭, ২০১৭ ১০:০৬ অপরাহ্ণ

সিলেটের শিববাড়ির ‘আতিয়া মহল’ নামক পাঁচ তলা ভবনটিতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তৃতীয় দিনের মতো জঙ্গি বিরোধী অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। ভবনের ভিতর এক নারীসহ ৪ জঙ্গির লাশ পেয়েছেন সেনা সদস্যরা। ভিতরে আরো কোনো জঙ্গির জীবিত না থাকার সম্ভবনা থাকলেও এখনো সেখানে অভিযান চালাচ্ছেন তারা।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সোমবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান এ সব তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাত থেকে ভিতরে ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে থাকার দুঃসহ স্মৃতি এখনো ভুলতে পারছেন না ওই ভবনের উদ্ধার পাওয়া (সেনাবাহিনীর তৎপরতায়) বাসিন্দাদের অনেকেই। পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরও ওই ভবনে আর ফিরতে চান না অনেকেই। তাদের মধ্যে রয়েছেন আতিয়া মহলের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও শিরিন আক্তার দম্পতি। বিবিসি বাংলাকে তারা বলেছেন, ‘জঙ্গি-বিরোধী এই অভিযান এক সময় শেষ হবে, বাড়িটা থেকে জঙ্গি ও বিস্ফোরকও খালি করা হবে। সবই হয়তো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় ঐ বাড়িতে আটকে থাকার সময়ে এত দুঃসহ স্মৃতি ও ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছে, যে সেখানে আর বসবাস করা সম্ভব না।’

তারা জানিয়েছেন, গোলগুলির শব্দে তারা ধরে নিয়েছিলেন যে ভবনটি থেকে আর জীবিত বের হতে পারবেন না তারা। তারা মারা গেলে মৃতদেহের পরিচয় যেন নিশ্চিত হতে পারে সবাই, সেজন্য আটকে থাকা অবস্থায় নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়েছিলেন পুরোটা সময়।’

সেই দুঃসহ ও ভয়ার্ত স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়ে শিরিন আক্তার তার স্কুল পুড়য়া শিশুকন্যার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি জানিয়েছেন, বাবা-মাকে জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে থাকতে দেখে তাদের শিশুকন্যা তাকে প্রশ্ন করেন, ‘মা আমার তো পরিচয়পত্র নাই, আমার কি হবে? আমাকে কি মেরে ফেলবে?’

শিরিন জানান, মেয়ের এই প্রশ্নের পর তিনি সম্পূর্ণভাবে অসহায় বোধ করতে শুরু করেন।

এই দম্পতি আরো জানিয়েছেন, ভবনটি ঘিরে ফেলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যখন মাইকে মর্জিনা বেগমকে বের হয়ে আসতে বলছিলেন, তখন তারা বুঝতে পারছিলেন না কাকে ডাকা হচ্ছে। কারণ, ওই ভবনের সব বাসিন্দাকে ভালোভাবে চিনেন না তারা।

শিরিন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলেও আর কখনো আতিয়া মহলে ফিরতে চান না তিনি বা তার পরিবার। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর শঙ্কায় ৩০ঘন্টা কাটিয়ে আসার পর ঐ বাড়িতে আর দৈনন্দিন জীবন যাপন করা সম্ভব নয়।

একইরকম বক্তব্য দিয়েছেন ওই ভবনের পঞ্চম তলার বাসিন্দা আনিসুর রহমান।

তিনি জানিয়েছেন, আটকে থাকার পুরো সময়টাতে ফ্ল্যাটের মেঝেতে লেপ আর তোষক ফেলে শুয়েছিলেন তিনি ও তার স্ত্রী। ভেবেছিলেন, অভিযানে জঙ্গিদের সাথে তারাও মারা পড়বেন। আনিসুর রহমান বলেছেন ‘শুক্রবার রাতে প্রতি মুহূর্তের গোলাগুলির শব্দে ভেবেছি মৃত্যু আমার দরজায় কড়া নাড়ছে। মৃত্যু আসন্ন জেনে প্রায় সব আত্মীয়কে ফোন করে কথা বলে নিয়েছিলাম।’

শনিবার (২৫ মার্চ) সকাল ১০-১১টার দিকে, যখন তার দরজায় টোকা পড়ে, উঁকি দিয়ে দেখেন দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন সেনা সদস্যরা। ইশারায় চুপ থাকতে বলে একে তাদের বের করে নিয়ে আসে সেনা সদস্যরা। সেনা বাহিনীর তৎপরতায় সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও আতংক কাটেনি আনিসুর রহমানের। স্ত্রীকে নিয়ে চলে গেছেন সিলেট শহরে। তিনি জানিয়েছেন, আর কখনো ফিরতে চান না আতিয়া মহলে। সব স্বাভাবিক হয়ে গেলেও না।

বিস্ফোরণস্থলে পাওয়া স্প্লিন্টার, মোবাইল থানায়

এদিকে, আতিয়া মহলে জঙ্গি বিরোধী সেনা অভিযান চলার মধ্যেই শনিবার (২৫ মার্চ) রাতে ঘটনাস্থলের কাছে দু’দফা যে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটে, সেই ঘটনার বেশ কিছু আলামত নিয়ে আসা হয়েছে সিলেটের মোঘলাবাজার থানায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-১৯টি বল-বিয়ারিং, স্প্লিন্টার, দুটি মোবাইল ফোন সেট, ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া কয়েকটি লোহার ছোট পাত, স্কচ টেপ ও রক্তমাখা একটি চাদর। এ ছাড়া বিচ্ছিন্ন কয়েক পাটি জুতোও রয়েছে।এগুলোকে গুরুত্বসহকারেই নিয়েছেন তদন্তকর্মকর্তারা।

ওই বোমা বিস্ফোরণে দু’জন পুলিশ সদস্যসহ মোট ৬ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন আরো অনেকে। তাদের মধ্যে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র‌্যাব) গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ। উন্নত চিকিৎসার জন্য রবিবার (২৬ মার্চ) রাতে তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ হামলার ঘটনায় মোঘলাবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মোঘলাবাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল জানিয়েছেন, রবিবার (২৬ মার্চ) রাতে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শিপলু চৌধুরী বাদী হয়ে এই মামলা (নম্বর-৭) দায়ের করেন।

*প্রতিবেদেনের বেশ কিছু তথ্য বিবিসি বাংলার সৌজন্যে প্রাপ্ত.

ছবি : আইএসপিআর ও বিবিসি বাংলার সৌজন্যে.

(Visited ২ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি