এইচ আর হীরা: নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন ড্রোন উড়ানো হচ্ছে বরিশালের আকাশে। জেলা ও মহানগরীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বাণিজ্যিক ও বিনোদনমুলক ভিডিও নির্মানে অবৈধভাবে ব্যবহৃত বা উড়ানো হচ্ছে ড্রোন (মনুষ্যবিহীন উড়োযান)। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ড্রোন আমদানি, সংরক্ষন এবং ব্যবহার সরকারীভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও কতিপয় ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান তা মানছেন না।
বরিশাল নগরীর বাইরেও বিভিন্ন উপজেলা বিয়ে বা মেহেদী অনুষ্ঠান, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অনুষ্ঠান, বিভিন্ন কর্পোরেট গ্রুপের প্রচারণামুলক অনুষ্ঠান ধারনে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। সাধারনের চোখে ড্রোনের ব্যবহার কোন নেতিবাচক কাজে ব্যবহার করতে দেখা না গেলেও কৌশলে তা কুচক্রি মহল অপরাধমুলক কাজেও ব্যবহার করতে পারে বলে আশঙ্কা থাকায় পুলিশ এ ব্যাপারে তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, সামগ্রীকভাবে দেশে ড্রোনের আমদানি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ।
তবে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে অনুমতি নিয়ে ড্রোন ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আইন-শৃংখলা রক্ষায় পর্যবেক্ষনের লক্ষ্যে ড্রোন ব্যবহার বা উড়াতে পারেন। সর্বসাধারনের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ড্রোন ব্যবহারের সুযোগ নেই। তবে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না বরিশালে।
অবৈধভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, প্রমোশনাল ও প্রচারণামুলক কাজে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে অবৈধ ড্রোন। নগরীর বাইরে উপজেলা পর্যায়েও বিয়ে বা মেহেদী অনুষ্ঠান, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অনুষ্ঠান, বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের বড় বড় আয়োজন এবং তাদের প্রমোশনাল বিজ্ঞাপনচিত্র তৈরি, মিউজিক ভিডিও বা নাটক তৈরিসহ নানা ধরনের ভিডিও ধারনে অবৈধভাবে ড্রোন উড়ানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ওয়েডিং ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রæপের এক সদস্য জানান, তিনি যেসব প্রতিষ্ঠানের হয়ে ড্রোন ব্যবহার করেন সেসব প্রতিষ্ঠান নিজেরা ড্রোন ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে থাকে। তবে তিনি ড্রোন সংরক্ষন বা ব্যবহারের জন্য কোন অনুমতি নেন না বা প্রয়োজন হয়না বলে জানান।
ড্রোন রাখার জন্য কোন অনুমতির প্রয়োজন নেই বলেও তিনি মতামত ব্যাক্ত করেন। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, দেশের আকাশসীমায় ড্রোন ওড়াতে হলে দেড় মাস আগে অনুমতি নিতে হবে। আর কেউ নির্দেশনা না মানলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বিনা অনুমতিতে দেশের আকাশে ড্রোন উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করে সিভিল এভিয়েশন। আর যেসব স্থানে বিমানবন্দর নেই সেখানে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তবেই ড্রোন ব্যবহার করা যাবে।
ড্রোন ওড়াতে সিভিল এভিয়েশনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। এব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম (বার) বলেন,‘অনেকে বিভিন্ন সময় ড্রোন ব্যবহারের জন্য আমাদের কাছে অনুমতির চেয়ে আবেদন করেন, সেগুলো আমরা যাচাই-বাচাই করে অনুমতি দিয়ে থাকি।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা বিঘœ হতে পারে এমন কাজে যদি অনুমতি না নিয়ে কেউ ড্রোন ব্যবহার করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মোটকথা বিধিমালা মেনে অবশ্যই ড্রোন ব্যবহার করতে হবে।