করোনার প্রকোপের মাঝেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে যক্ষ্মা (টিবি)। করোনার কারণে স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হওয়ায় গত এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিশ্বজুড়ে বাড়তে শুরু করেছে যক্ষ্মার প্রকোপ।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর)বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, করোনার ধাক্কা নিরাময়যোগ্য যক্ষ্মা (টিবি) মোকাবিলায় কয়েক দশকের অগ্রগতিকে ম্লান করে দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচওর প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, ‘এটি একটি উদ্বেগজনক খবর। যা এই প্রাচীন কিন্তু প্রতিরোধ এবং নিরাময়যোগ্য রোগে আক্রান্ত লাখ লাখ মানুষের রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা ও সেবার শূন্যতা রোধ করতে বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবনের জরুরি প্রয়োজনে বৈশ্বিক জাগরণের আহ্বান হিসাবে কাজ করবে।’
২০২০ সালের বার্ষিক টিবি প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা ক্রমবর্ধমান হারে বিঘ্নিত হওয়ায় যক্ষ্মা নির্মূল অগ্রগতির আরও অবনতি ঘটেছে।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে যক্ষ্মায় ভুগছেন প্রায় ৪১ লাখ মানুষ। রোগ নির্ণয় না করায় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না দেওয়ায় এটি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে যক্ষ্মায় ভোগা রোগীর সংখ্যা ছিল ২৯ লাখ।
ডব্লিউএইচও আরও জানিয়েছে, করোনাভাইরাস যক্ষ্মা রোগীদের জন্য আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা তহবিল করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় ব্যয় হওয়ায় এই পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া লকডাউনের কারণে ব্যহত হয়েছে যক্ষ্মায় আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা সেবাও।
এই সময়ে প্রতিরোধমূলক রোগের চিকিৎসা নেওয়ার পরিমাণও কমেছে। ২০২০ সালে ২৪ লাখ মানুষ যক্ষ্মার চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের কাছে গেলেও ২০১৯ সালের তুলনায় তা ২১ শতাংশ কম।
টেড্রোস আরও বলেছেন, ‘এই প্রতিবেদন আমাদের আশঙ্কাকেই নিশ্চিত করেছে যে, মহামারির কারণে যক্ষ্মার বিরুদ্ধে বহু বছরের অপরিহার্য স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতি ব্যাহত হতে পারে। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে যক্ষ্মায় মারা গেছেন ১৫ লাখ মানুষ। এরমধ্যে ২ লাখ ১৪ হাজার এইচআইভি পজিটিভ রোগীও আছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে যক্ষ্মায় মারা গেছেন ১২ লাখ মানুষ। ওই বছর এইচআইভিতে মারা যান ২ লাখ ৯ হাজার মানুষ। বিশ্বের ৩০টি দেশে যক্ষ্মায় মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব দেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি।