দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার আলোচিত যমজ দুই বোন মণি-মুক্তার জন্মদিন আগামীকাল রোববার (২২ আগস্ট)। এদিন তারা ১৩ বছরে পা দিতে যাচ্ছে। ১২ বছর আগে মণি-মুক্তা জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেয়। পরে চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে দুই বোনকে আলাদা করা হয়।
বাংলাদেশে প্রথম অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশুর সফল পৃথককরণ করা হয়। আর ঝুঁকিপূর্ণ এ চিকিৎসায় বাংলাদেশের খ্যাতিমান চিকিৎসক এ আর খানের সাফল্য বিশ্বদরবারে চিকিৎসাবিজ্ঞানকে আরও সম্ভাবনাময় করে তুলেছে।
বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের জয় প্রকাশ পালের মেয়ে মণি-মুক্তা। মা-বাবার কোলে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মণি-মুক্তা এখন ঝাড়বাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।
পরিবার জানায়, আগামীকাল রোববার সকালে নিজ বাড়িতে উদযাপন করা হবে মণি-মুক্তার জন্মদিন। প্রতিবছর শিক্ষক ও তাদের বন্ধুবান্ধবসহ প্রতিবেশী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে কেক কেটে জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে গতবারের মতো ঘরোয়া পরিবেশে উৎযাপন করা হবে বলে জানান মণি-মুক্তার বাবা জয় প্রকাশ পাল।
দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে মণি-মুক্তা বলে, আমরা চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই। দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।
জয় প্রকাশ পাল ও কৃষ্ণা রানী পালের ঘরে ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে মণি ও মুক্তা জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়। পরে রংপুরের চিকিৎসকরা তাদের মা-বাবাকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন।
২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে মণি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়। ৮ ফ্রেব্রুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মণি-মুক্তা ভিন্ন সত্তা ও ভিন্ন জীবন লাভ করে। তখন থেকেই বাংলাদেশের চিকিৎসাবিজ্ঞানে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।