রক্তরাঙা পলাশ-শিমুল অথচ ফিকে হয়ে যায় মুজিবের রক্তরঙে। রক্তলাল ভোরে সূর্য ওঠে, তবু বেদনার ভারে ডুকরে কাঁদে।
হে মানুষ, শোনো, পিতা হারানোর গল্প। বেদনার অশ্রু ধারায় প্রবাহিত করো শক্তিধারা। যতদিন রবে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, ততদিন রবে পিতা হারানোর বেদনা। শোকের পাষাণে দাঁড়িয়ে মানুষ, গাও পিতার-ই জয়গান।
১৫ আগস্ট, ১৯৭৫। সেই যে রক্তের ধারা ছুটলো, তা আজও প্রবাহমান বাঙালির হৃদয়ে। পিতা সাজিয়েছেন বাঙালির বাগান। সে বাগান ভালোবাসায় ভরপুর ‘মুজিব’ নামের ফুলে ফুলে। এত ভালোবাসা যার তরে, তাকে হারানোর রক্তক্ষরণ থামে কীসে!
পাঁচ দশকের বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার হাতেই অধিক নির্ভার বাংলাদেশ। অর্জন আর গৌরবের ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে বিস্ময়। দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এখানকার স্বপ্নবাজ মানুষেরা।
এত অর্জনের পরও বাঙালির পুব আকাশে যে সূর্য ঊষালগ্নেই অস্ত গেল, তা আজও অমানিশার ঘোরে আটকা। পিতা হারিয়ে যে আঁধারে ডুবেছে জাতি, সে আঁধার দিনে দিনে আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস কেবল হারানো আর শোষিতের ইতিহাস। এ অঞ্চলে বিদ্রোহের আগুন জ্বলেছে বহুবার। তা নিভেও গেছে বারবার। বাঙালি জাতিসত্তার এমন সংকটকালেই ত্রাতা হিসেবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মুজিবের আবির্ভাব। যার জন্মের মধ্য দিয়েই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের প্রতিবাদ। বিদ্রোহের যে আগুন জ্বালিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মেছিলেন মুজিব, সে আগুন আরও জ্বলজ্বল করছে এতদিনে। মুজিবের জন্ম মানেই মানব আকাশে মুক্তির আভা। মুজিব মানেই শোষিতের জয়গান, শোষকের প্রস্থান।
মুজিব। যে নামের বন্দনা হয় না কোনো বিশেষণের সীমারেখায়। যার তরে কেঁদে কেঁদে নয়ন বারি ফুরিয়ে যায়, তবু বেদনার পাথর বুকে চাপা থেকে যায়। বুক যার মানবের ভালোবাসায় ভরা, সে বুকই রক্তাক্ত করেছে পাষাণেরা।