এনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার এক গভীর চক্রান্ত চলছে। লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার অপতৎপরতায় লিপ্ত দেশি-বিদেশি চিহ্নিত মহল। এখন দেশবিরোধী নানা অসম চুক্তির মহড়া চলছে।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র চক্রান্ত প্রতিহত করে মাতৃভূমির স্বাধীনতা সুরক্ষা এবং গণতন্ত্রের পতাকাকে সমুন্নত রাখতে আমাদের সকলকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য।’
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শনিবার (২৫ মার্চ) এক বার্তায় খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন।
বিএনপি প্রধান বলেন, ‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবোজ্জল সোনালী দিন। এ দিনে বিশ্ব মানচিত্রে দেশ মাতৃকার স্বাধীন সত্ত্বা ফুটে উঠেছিল। আজকের এই দিনে আমি দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।’
তিনি বলেন, ‘এ মহানদিনে আমি শ্রদ্ধা জানাই স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি। যাদের আত্মত্যাগে আমরা অর্জন করেছি স্বজাতির মুক্তি। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানসহ সকল জাতীয় নেতার স্মৃতির প্রতি আমি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। স্মরণ করি সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা, যাদের নয় মাস জীবন-মরণ লড়াইয়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। আমি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি সে সব মা-বোনদের কথা, যারা মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘২৬ মার্চ আমাদের এমন এক মহিমান্বিত দিন, আমাদের হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা যা সংগ্রাম আর যুদ্ধের রক্তস্নাত পথে বিশ্ব মানচিত্রে উদ্ভাসিত হয় দেশমাতৃকার মুক্তি। এ দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। সেদিন জাতীয় নেতৃত্বের অনুপস্থিতিতে তাঁর ঘোষণায় দিশেহারা জাতি পেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অভয়মন্ত্র। ফলে দীর্ঘ নয়মাস ইতিহাসের এক ভয়ংকর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হই।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘একটি শোষণ, বঞ্ছনাহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এদেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। নানা কারণে আমরা সে লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হইনি। বার বার ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী শক্তি আমদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। দেশি-বিদেশি চক্রান্তের ফলে আমদের গণতান্ত্রিক পথচলা বার বার হোঁচট খেয়েছে। বিঘ্নিত হয়েছে আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রচেষ্টা। দুর্বল করা হয়েছে আমাদের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বকে।’
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে অপর এক বার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
বিএনপির কর্মসূচি
দিবসটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করবে বিএনপি। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রবিবার (২৬ মার্চ) সকাল ৮টা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে এবং স্মৃতিসৌধ থেকে ঢাকায় ফিরে সকাল সাড়ে নয়টায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম এর মাজারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বেলা ৩টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপির উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হবে।