সরকারিভাবে স্বীকৃত গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে ত্রিশ লক্ষ বৃক্ষরোপন করা হবে। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে এই বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন; শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়।
রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘৪৭ তম গণহত্যা দিবসে ৩০ লক্ষ শহীদের স্মৃতি চিরসবুজ করে রাখার জন্য ৩০ লক্ষ বৃক্ষরোপন করা হবে। আগামীকাল (২৫ মার্চ) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ২৫টি বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।’
বৃক্ষরোপনের মতো কর্মসূচির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘এ কর্মসূচির মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশে দেশে স্বাধীনতার সংগ্রামে শহীদদের দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণে বিপন্ন পৃথিবীকে রক্ষায় অংশ নেবে।’
২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই দিবস পালনের মাধ্যমে দেশে ও দেশের বাইরে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতকারীদের অপচেষ্টা রোধ করা সম্ভব হবে। এতে যেমন নতুন প্রজম্মের আত্মপরিচয়ের সংকট মোচন হবে, তেমনি ধর্মনিরপেক্ষ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিকে যে চরম মূল্য দিতে হয়েছে তা তারা জানতে পারবে।’
একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘দেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাতে হবে। যাতে তারা তাদের পার্লামেন্টে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাশ করে। যে সকল দেশ একাত্তরে সংগঠিত বাংলাদেশে গণহত্যার প্রতিবাদ ও নিন্দা করেছিল, তাদের অনুরোধ করা হলে এ বিষয়ে তারা পার্লামেন্টে প্রস্তাব গ্রহণে সম্মত হবে বলে আশা করা যায়।’
২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিকভাবে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন করে। এতে ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনে দীর্ঘদিনের দাবির একটি অংশের আর কার্যকারিতা থাকছে না, বলেও মনে করছেন শাহরিয়ার কবির। তবে এরপরও আন্তর্জাতিক অংগনে বাংলাদেশে গণহত্যার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রচারণা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেন, ‘গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পাশাপাশি আমরা এ বিষয়ে কি করছি তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গণহত্যা চালানো হয়েছিল বলেই দেশের মানুষ অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।’
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ ও শহীদ কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।