দক্ষিনাঞ্চলে করেনা সংক্রমণ পরিস্থিতি অবনতি অব্যাহত থাকার মধ্যে পর পর দুদিন ৪ জন করে মৃত্যু হল। মৃতদের মধ্যে বরিশাল মহানগরীতে ৩জন ছাড়াও সদর উপজেলায় একজন এবং ভোলা ও বরগুনাতে দুজন করে।
এনিয়ে দক্ষিনাঞ্চলে মৃতের সংখ্যা ২৬১ জনে উন্নীত হবার সাথে সরকারীভাবে আক্রান্তের সংখ্যাও ১৪ হাজার ৪৭৫ জনে পৌছল। বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল মহানগরীর কাজীপাড়া ও বাংলাবাজারে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদের বয়স ৭০ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে। আগের দিন দক্ষিনাঞ্চলে আরো ৪জনের মৃত্যু হয়। যার দুজন বরিশালে অপর দুজন বরগুনায়। মঙ্গলবার মহানগরীর কলেজ এভিনিউতে ৭৫ বছর বয়স্কা এক নারীর মৃত্যু হয়। এছাড়া সদর উপজেলার কড়াপুরেও ৬৫ বছরের এক পুরুষ মারা গেছেন মঙ্গলবারে।
বরিশালের সবারই মৃত্যু হয়েছে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হসপাতালে। এছাড়া মঙ্গলবারে বরগুনাতে দুজন ও বুধবারে ভোলাতে আরো ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে মৃত্যুহার ১.৮০%-এ উন্নীত হল। যা এ সপ্তাহের শুরুতে ছিল ১.৭৫। আর চলতি মাসের ২৯ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্ত ৩ হাজার ১৫২ জনের মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হল। যে সংখ্যাটা পূর্ববর্তি ৪ মাসে চেয়েও বেশী।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ৪১৩ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৭২ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়। দক্ষিনাঞ্চলে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৯৫ হাজার ৩৫৪ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৪ হাজার ৪৭৫ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হল। সনাক্তের গড় হার এখন ১৫.৩১ %।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশালে নতুন ৪১ জন সহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিনাঞ্চলের সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৫৭৪ জনে উন্নীত হল। তবে আক্রান্তের এ সংখ্যার মধ্যে মহানগরীতেই প্রায় ৫ হাজার ৭শ। জেলায় এ পর্যস্ত যে ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, তারমধ্যে মহানগরীতেই সংখ্যাটা প্রায় ৬৫। গত ৪৮ ঘন্টায় জেলাটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৯। সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলের মধ্যে বরিশাল মহানগরীর পরিস্থিতিই এখনো যথেষ্ঠ ঝুকিপূর্ণ।
দ্বীপজেলা ভোলার পরিস্থিতির অবনতিও অব্যাহত রয়েছে। জেলাটিতে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ জন সহ বিগত ৪৮ ঘন্টায় ৩২ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময়ে মারা গেছেন দুজন। ফলে জেলাটিতে মোট আক্রান্ত ১ হাজার ৭৪৪ জনের মধ্যে ২৪ জনের মৃত্যু হল। জেলাটিতে সনাক্তে হার ১৩.২৫% হলেও মৃত্যুহার ১.৩৮%। চলতি মাসেই ভোলাতে করোনা সংক্রমন ও মৃত্যু সংখ্যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
পটুয়াখালীতেও গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৯জন আক্রান্তের ফলে মোট সংখ্যাটা ২ হাজার ১০৭ জনে বৃদ্ধি পেল। জেলাটিতে মৃত্যু সংখ্যা ৫০। সনাক্তের তুলনায় যা দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ। এ জেলায় সনাক্তের হার ১১.৯৫% হলেও মৃত্যুহার ২.৩৭%। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীর পরিস্থিতিও অনেকটাই উদ্বেগজনক। গত ২৪ ঘন্টায় জেলাটিতে নতুন ৫ জন সহ মোট অক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৬২।
মারা গেছেন ২৪ জন। জেলোটিতে গত ৪৮ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৮। সনাক্তের হার দক্ষিনাঞ্চলের সর্বোচ্চ ১৯.৬৭%-এর বিপরিতে মৃত্যুহার ১.৯০ %।
পিরোজপুরে গত ২৪ ঘন্টায় দুজন সহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৫৭৬ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৩১ জন। জেলাটিতে গত ৪৮ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯ জন।
আর সনাক্তের হার দক্ষিণাঞ্চলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮.৩৯%-এর বিপরিতে মৃত্যু হার ১.৯৭%। বরগুনাতও গত ২৪ ঘন্টায় এক জন সহ মোট আক্রান্ত ১ হাজার ২১২ জনের মধ্যে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলাটিতে সনাক্তের হার ১০%। মৃত্যুহার ১.৯৮ %। মঙ্গলবারেই বরগুনা সদরে দুজন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়।
আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে আরো ১০৪ জন সহ সর্বমোট ১১ হাজার ৭৪৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ অঞ্চলে সুস্থ্যতার হার ছিল বৃহস্পতিবারে ৮১.১৩ %। যা আগের দিনের চেয়ে দশমিক ১৩ ভাগ বেশী।