আমি লেখিকা নই। তাই লেখা শুরুর আগে অনেকক্ষণ কলম ধরে বসেই ছিলাম। তবুও কিছু লিখতে চাই। ‘ইচ্ছে’ শব্দটা ছোট, কিন্তু অনেক নারীর জন্য ‘অপূরণীয়’ শখের। গৌরচন্দ্রিকা ছাড়াই বলব, আমি বড় হয়েছি কড়া শাসনের মধ্যে। ইচ্ছে হলেই অনেক কিছু করা যেত না। হয়তো এটার জন্যই আজ আমার কিছু সফলতাও রয়েছে।
আমি নুসরাত, কর্মরত আছি ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ডিপার্টমেন্টে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং বিভাগে বিবিএ, এমবিএ শেষ করার পরই সুযোগ আসে ট্যুরিজম বিভাগে শিক্ষকতা করার। নারী দিবসে আমার প্রিয় ছাত্রী বা অন্য পাঠিকাদের মন খুলে স্বপ্ন দেখতে বলতে চাই।
নারী স্বপ্ন দেখতে চাইলে বাধা আসাটাই স্বাভাবিক। তবুও এগিয়ে তো যেতে হবে। কখনো বা ঘড়ি ধরে চটপট রান্না করে, কখনো বা সময়মতো ক্লাসে গিয়ে, কখনো মুক্ত বিহঙ্গের মতো স্কুটি চালিয়েও।
আমার স্বপ্ন বলে কিছু ছিল কিনা, কখনো বুঝিনি প্রকৃত অর্থে। কিন্তু সহযোগী অনেক মনোভাব আমার আশেপাশে না পেলেও পেয়েছি সহকর্মীরূপী আমার কর্তাকে। কোনোদিন আমার কোনো কাজে ‘না’ শুনিনি তার। তার প্রেরণা আসলে দেখতে পাওয়া যায় না, তবুও যথেষ্ট উপলব্ধিযোগ্য বটে।
আমার মতো আরো অনেকেই আছেন, যারা ‘ঘর আর বাহির’ দুটোই সামলাচ্ছেন খুব সুন্দরভাবে, গুছিয়ে। কিন্তু প্রশংসা করার মতো কেউ নেই, কেউ হয়তো কাঁধে হাত রেখে বলে না- ‘বাহ্ দারুণ রেঁধেছো তো’। আবার অনেকেই প্রশংসা পাচ্ছেন সর্বত্র। আমার লেখাটি তাদের কাছে, যারা খুব একটা প্রশংসিত নাও হতে পারে। তাতে কি? আপনি নারী হিসেবে আপনার প্রেরণা, উচ্ছলতায় এগিয়ে যান সাবলীলভাবে- Be bold and you are beautiful! অথবা অরুন্ধতী রায়ের মতো বলুন: ‘Dream and demand the impossible.’
আমরা কিন্তু সব পারি, জানেন? ‘দায়িত্ব’ শব্দটার প্রকৃত অর্থ হয়তো আমরাই সবচেয়ে ভালো বুঝি। না হয় কিভাবে পারতাম কর্মক্ষেত্র, সংসার, বাচ্চা- এমনকি রন্ধনশালাতেও সময় আর যোগ্যতার শিল্পিত মিশ্রণ ঘটাতে। নিজেই পিঠ চাপড়ে নিন না আজ একবার। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে বাহবা দিন, ভেবে দেখুনতো আপনার বিন্দু বিন্দু স্বপ্নগুলো নিয়ে। চোখ খুলে, মন খুলে হেসে নিজেকে বলুন: সমস্ত যোগ-বিয়োগের বাইরে এটাই সত্য ‘আমি সুন্দর, আমি নারী- আমরাই পারি’।
এই অগোছালো লেখাটি আমার সব বান্ধবীর, প্রিয় কিছু ভাবীদের, আমার ছাত্রীদের আর সেইসব নারীর উদ্দেশ্যে যারা আজও স্বপ্ন দেখেন নতুন একটি ভোরের প্রয়োজনে।