লকডাউন ঘোষণার পরপরই বরিশালের বিভিন্ন বাজারে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য ‘লকডাউন’ শুরু হবে—সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের পরই এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, লকডাউনের কারণে বরিশালের বিভিন্ন বাজারে আতঙ্কের কেনাকাটা বা প্যানিক বায়িং শুরু হয়ে গেছে।
মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে ভিড় করছে। কেউ কেউ একসঙ্গে বাড়তি পরিমাণ পণ্য কিনে ঘরে ফিরছেন।লকডাউন পরিস্থিতির বিবেচনা করে অনেক মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মজুদ শুরু করেছেন। নগরীর শপিংমলগুলোতেও লোকজনের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। লকডাউনের খবরে ঈদের কেনাকাটাও সেরেছেন কেউ কেউ।
শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত বরিশালের অন্যতম বড় তিন বাজার চৌমাথা,নথুল্লাবাদ ও নতুন বাজারে ক্রেতাদের বাড়তি ভিড় দেখা যায়। বেশিরভাগ মানুষ সংসারের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য—চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ ও আলু কিনছিলেন।এদিকে, লকডাউনের খবরে বরিশালের মুদি দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। নগরীর প্রধান পাইকারী বাজার চকবাজারে হঠাৎ বেড়ে যায় ক্রেতা চাপ। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খুচরা বিক্রেতারা জিনিসপত্র কিনতে আসায় রীতিমতো ঠাসা-ঠাসিতে পরিণত হয় চকবাজারে।
এদিকে শনিবার বেলা ৩টার দিকে নগরীর নথুল্লাবাদ কাচাবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। কেউ কেউ সাতদিন কিংবা পনের দিনের জন্য পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ বাজারে ক্রেতার চাপ বেড়ে যাওয়াতে চাল, ডালসহ বিভিন্ন ধরনের নিত্য পণ্যে কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা করে বেশি নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মো. হাবিব নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক ব্যক্তি জানান, ‘গত ঈদেও পরিবারের সদস্যদের জন্য ঈদের কেনাকাটা করা হয়নি। এবারও একই পরিস্থিতি হতে পারে। এ কারনে লকডাউন শুরুর খবরে চৌমাথা বাজার থেকে ঈদের কেনাকাটা সেরে ফেলি। এদিকে নগরীর নথুল্লাবাদ বাজারেও নিত্যপণ্যের দোকানগুলোতে দুপুর থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। চৌমাথা এলাকায় অবস্থিত হাসান স্টোর নামে একটি নিত্যপণ্যের দোকানী মো. আরিফ জানান, ‘লকডাউনের খবরে দোকানে ক্রেতা বেড়েছে। হয়তো ক্রেতারা মনে করছেন এখন এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে আরও বাড়তে পারে। এ পরিস্থিতিতে লোকজন বাড়িতে মজুদ শুরু করেছে।’
শুধু নগরীতে নয়, একই পরিস্থিতি উপজেলা গুলোতেও। বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা বাজারের আলামিন স্টোরের মালিক মো. শাহজাহান জানান, লকডাউনের ঘোষণা শোনে লোকজন দোকানে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে ভিড় শুরু করে। যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শনিবার সকালে প্রথম ‘লকডাউনের’ খবর জানান।
এরপর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ‘লকডাউনের’ সিদ্ধান্তের কথা জানান। বাজারে ভিড় বাড়তে শুরু করে বেলা দুইটার পর থেকে।