গাজীপুর প্রতিনিধি : মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষার আবেদনের ব্যাপারে মত প্রকাশ করেছেন। বুধবার (২২ মার্চ) সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে ফাঁসির রিভিউ আবেদন খারিজের রায় শোনানোর পর তিনি কারা কর্তৃপক্ষের নিকট এ মত প্রকাশ করেন।
গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে ফাঁসির রিভিউ আবেদন খারিজের রায় মুফতি হান্নানকে শোনানো হয়। এ সময় মুফতি হান্নান রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষা চাওয়ার ব্যাপারে মত প্রকাশ করেন। এ ছাড়া তার সহযোগী এবং ওই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি শরীফ শাহেদুল বিপুলকে রায় শুনানো হলে তিনিও রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষা চাওয়ার ব্যাপারে মত প্রকাশ করেন।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুলের ফাঁসির রিভিউ আবেদন খারিজের রায়ের কপি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে।
উল্লেখ, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
এ মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল বিপুলকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং দেলোয়ার হোসেন রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।
নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন। পরে গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল। অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন।
আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ হয়ে যায়। গত ১৭ জানুয়ারি এ রায় প্রকাশের পর আসামীরা রিভিউ করেন। ১৯ মার্চ দেওয়া রিভিউ খারিজের রায় মঙ্গলবার (২১ মার্চ) প্রকাশিত হয়।