করোনাকালে বাংলাদেশের যে সেক্টরটি সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ তা হল সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে আছে। এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়াও সম্ভব হয়নি। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের বিকল্প উপায় খুজঁছে সবাই। অনলাইন কার্যক্রমের গতির ব্যবহার আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। মানুষ এ ভয়াবহ পরিস্থিতিকে কাটিয়ে উঠতে প্রণান্তকর চেষ্টা করছে। তবে এতসব বাধাবিপত্তি এবং প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে সকল প্রকার একাডেমিক ও প্রশাসনিক শিক্ষা কার্যক্রম সফলতার সাথে সম্পন্ন করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে যে প্রতিষ্ঠান তা কোন উন্নত দেশের নয় বরং উন্নয়নশীল আমাদের এই ডিজিটাল বাংলাদেশেরই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)।
সকল প্রকার শিক্ষা কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে ডিআইইউকে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশী সফলতা এনে দিয়েছে তা হল “ওয়ান স্টুডেন্ট-ওয়ান ল্যাপটপ” কর্মসূচী। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে শিক্ষার অনিবার্য অনুসঙ্গ কম্পিউটার। ডিজিটাল বাংলাদেশে এর গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে অনলাইন শিক্ষার একমাত্র উপকরণই কম্পিউটার আর সেই সাথে তার চালিকা শক্তি ইন্টারনেট সংযোগ। এ দুই’ এর সুবন্দোবস্ত থাকলে দূরত্ব কোন বাধা নয়। যেকোন স্থানে বসেই লেখাপড়া চালিয়ে নেয়া সম্ভব। বিশেষ করে করোনা অতিমারীকালে (কোভিড-১৯) এর গুরুত্ব প্রতিটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবক হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে, সবাই এ বিষয়টি আজ গভীরভাবে উপলদ্বি করতে পেরেছে। অথচ আজ থেকে দশ বছর আগেই দেশবরেণ্য তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, স্বপ্নবাজ ও উদ্যোক্তা উন্নয়নের রূপকার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. মোঃ সবুর খান তার তীক্ষ দূরদর্শিতা দিয়ে এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। তাই তথ্যপ্রযুক্তিকে শিক্ষার্থীর এবং শিক্ষার গুনগত মানউন্নয়নের কাজে লাগানো, লেখাপড়ার পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তিতে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তথ্য প্রযুক্তির ক্রমবিকাশমান ধারার সাথে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে যুগোপযোগী করে তুলতে এবং প্রতিযোগীতামূলক চাকরির বাজারে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই “ওয়ান স্টুডেন্ট-ওয়ান ল্যাপটপ” কর্মসূচীর আওয়তায় প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদান শুরু করেন সেই ২০১০ সাল থেকে। ১৬ই জুলাই ২০১১ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ চারশত শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে ল্যাপটপ তুলে দেয়ার মাধ্যমে এ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। এ কর্মসূচীর আওয়তায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫০০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যের ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয় ৮ বছর আগেই ২০১৩ সাল থেকে ডিআইইউ সকল শিক্ষাকার্যক্রম বিএলসি প্ল্যাটফর্মের আওতায় আনা হয়। পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় লক ডাউনের শুরু থেকেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনলাইন শিক্ষায় পারদর্শীতার প্রমাণ রেখে চলেছে এবং শিক্ষার্থীরাও প্রযুক্তির সাথে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। সকল প্রকার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনাও শিক্ষকদের জন্য শতভাগ সহজতর হয়েছে।
দূরশিক্ষণের সমস্ত আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতিসহ এ ল্যাপটপ হবে ইন্টারনেট সহায়ক, সর্বাধুনিক এবং অবশ্যই বিনামূল্যে। তদুপরি ল্যাপটপ ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং সার্ভিসিং এর জন্য প্রতিটি ক্যাম্পাসে স্বয়ংসম্পূর্ন সার্ভিসিং সেন্টার খোলারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কনসেপ্ট এর সাথে তাল মিলিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটালাইজেশন করার জন্য ল্যাপটপ প্রদানের পদক্ষেপটি এতোটাই সাহসী ও অভিনব যে শুধু বাংলাদেশেই নয়, সমস্ত দক্ষিণপূর্ব এশিয়াতেই এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত।