বাংলাদেশ নিজেদের ক্রিকেটের ইতিহাসে শততম ওয়ানডে ম্যাচেও জয় পেয়েছিল। ভারতকে হারিয়ে তারা সেই ম্যাচটি উদযাপন করেন। এবার শততম টেস্টেও জয়ের স্বাদই পেয়েছে টাইগাররা। এবার তাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। কলম্বোর পি সারা ওভালে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে সফরকারী বাংলাদেশ। আর এতে ক্রিকেটের ইতিহাসে নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষরেই লিখে রাখল মুশফিকবাহিনী।
শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের দেওয়া ১২৯ রানের লিডে ব্যাট করতে নেমে সব উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রান সংগ্রহ করে। ফলে বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯১ রান। যার জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা।
ম্যাচের শেষ দিনে ইনিংসের শুরুতেই বিদায় নেন সৌম্য সরকার। ২টি চারের মাত্র ১০ রান করেই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। রঙ্গনা হেরাথের বলটি সৌম্য উঠিয়ে দিলে তা তালুবন্দি করেন উপল থারাঙ্গা। এরপর ইমরুল কায়েস মাঠে নেমে প্রথম বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সৌম্যর পিছু নেন।
এদিকে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছিলেন তামিম ও সাব্বির। এরই মাঝে তামিম নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ২২তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। আক্রমণাত্বকভাবেই খেলেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তাদের উপর ভর করেই জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ।
তবে সেঞ্চুরি থেকে ১৮ রান দূরে থাকতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তামিম। পেরেরার বলটি উঠিয়ে মারলে তা তালুবন্দি করেন চান্দিমাল। ফলে তিনি ৭টি চার ও ১টি ছয়ের মারে ৮২ রান করে সাজঘরে ফিরেন। এ সময় তামিমের এমনভাবে আউট হওয়াতে যথেষ্ট বিরক্ত হয়েছেন দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তামিমের আউটের পর ড্রেসিংরুমে তাকে বিরক্ত হয়ে উঠে দাঁড়াতে দেখা যায়।
তামিমের আউটের পর স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ১১ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন সাব্বিরও। ব্যক্তিগত ৪১ রানে তাকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন দিলরুয়ান পেরেরা।
সাকিব-মুশফিক জুটিতে ভরসা করলে এদিন আশাহতই হতে হয়। সাকিব ব্যক্তিগত ১৫ রানে পেরেরার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন। ফলে জয়ের আশা অনেকটাই ফিকে হয়ে যায়।
তবে এরপর দলের হয়ে হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও মোসাদ্দেক হোসেন। এ জুটি দলকে জয়ের পথে টেনে নেন। জয়ের জন্য দুই রান বাকি থাকতে হেরাথের বলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন মোসাদ্দেক। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ উইকেটে নেমে একটটি চারের মারে জয় নিশ্চিত করেন। এ ম্যাচে জয় দিয়ে ইতিহাসই গড়লেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
এ ইনিংসে স্বাগতিকদের হয়ে দিলরুয়ান পেরেরা ৩টি ও রঙ্গনা হেরাথ ৩টি উইকেট নিয়েছেন।
দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশের হয়ে সাকিব আল হাসান তুলে নিয়েছেন ৬টি উইকেট। মিরাজ ৪টি, মুস্তাফিজ ৫টি উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে শনিবার (১৮ মার্চ) কলম্বো টেস্টের চতুর্থদিনে উইকেটে টিকে থেকেই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের আক্ষেপ বাড়িয়েছেন এই দুই লঙ্কান। এ দু’জনের ব্যাটে দিনশেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের শেষ সেশনে অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে স্বাগতিকরা সংগ্রহ করেছে ৮ উইকেটে ২৬৮ রান। এই সুবাদে তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ১৩৯ রান। শ্রীলঙ্কার টেল এন্ডারদের দাপটে শেষ দিনে লিড আরও ৫১ রান বাড়িয়ে নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশের সামনে ১৯১ রানের টার্গেট ছুড়ে দিতে সক্ষম হয়েছে স্বাগতিকরা।
এদিকে, গেল ১৫ মার্চ (বুধবার) কলম্বোর পি সারা ওভালে টসে জিতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে টেস্টের তৃতীয়দিনে (১৭ মার্চ) নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৬৭ রান তুলে ১২৯ রানের লিড দেয় বাংলাদেশ।