নয় লাখ কৃষক প্রায় এক লাখ ট্রাক্টর ও ছয় মাসের খাবার নিয়ে দিল্লি অবরোধ করে নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরুর পর অবশেষে বিতর্কিত ওই আইনে সংশোধনী আনার কথা ভাবছে মোদি সরকার।
কয়েক দশকের সর্ববৃহৎ কৃষকবিক্ষোভ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র বৈঠকের পর এসব কথা জানা যাচ্ছে। রয়টার্স অবশ্য ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করেই জানিয়েছে এ খবর।
রয়টার্স জানিয়েছে, সম্প্রতি কৃষিতে সংস্কার এনে বিজেপি সরকার নতুন যে আইন প্রণয়ন করেছে তা নিয়ে লাখ লাখ কৃষকের ব্যাপক বিক্ষোভের পর এর কিছু কিছু অংশ আগের মতোই রাখার কথা ভাবছে মোদি সরকার।
সম্প্রতি পাস হওয়া তিনটি আইনের বিরুদ্ধে শুক্রবারও দিল্লির আশপাশের সড়কগুলোতে বিক্ষোভ করেছে লাখ লাখ কৃষক। সরকার বলছে, পণ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া পর্যালোচনা ও পণ্য বিক্রির বিকল্প দেয়াই এ আইনের লক্ষ্য।
কিন্তু কৃষকদের আশঙ্কা, সেপ্টেম্বরে গৃহীত আইনটি শেষ পর্যন্ত ভারতের নিয়ন্ত্রিত বাজারব্যবস্থা ভেঙে দেবে এবং বন্ধ হবে সরকারের নিশ্চিত দামে গম ও চাল কেনা। এতে বেসরকারি ক্রেতাদের করুণাই হবে তাদের সঙ্গী।
শনিবার অমিত শাহ ছাড়াও কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কৃষক নেতাদের আলোচনার প্রাক্কালে এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘সরকার নতুন এই কৃষি আইনের বিভিন্ন সংশোধনী পুনরায় খতিয়ে দেখতে প্রস্তুত।’
ঊর্ধ্বতন ওই সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘সবার জন্য সমান স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টি বিবেচনা করে (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি) নতুন পাইকারি বাজারে কর আরোপের মতো ধারণা নিয়েও কাজ করতেও সরকার আগ্রহী।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার কৃষক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিতর্কিত ওই আইন নিয়ে আলোচনায় বসেছিল সরকার। নতুন আইন নিয়ে কৃষকরা তাদের ৩৯টি আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন সরকার পক্ষকে।
প্রসঙ্গত, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা ছাড়াও ভারতের প্রধান শষ্য উৎপাদনকারী রাজ্যগুলোর প্রভাবশালী কৃষক গোষ্ঠীর নেতৃত্বে চলমান এ কৃষক বিক্ষোভ মোদি সরকারের শাসনামলে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
অর্থনীতির বৃহৎ খাত কৃষিতে সংস্কার নিয়ে মোদি সরকারের সক্ষমতার পরীক্ষায় বলা হচ্ছে এটাকে। কেননা দেশটির ২.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির ১৫ শতাংশ কৃষি এবং ১৩০ কোটি মানুষের অর্ধেকই এর সঙ্গে যুক্ত