বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুল করিমের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার কর্মস্থলে।
তার কর্মস্থলে থাকা কক্ষটি এখন ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। তবে সেখান রয়েছে তার স্মৃতি বিজরতি চেয়ার-টেবিল, টেলিফোন ও ফাইলপত্র।
মোহাম্মদ আনিসুল করিম একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও মেধাবী অফিসার ছিলেন বলে জানিয়েছেন সহকর্মীরা। পাশাপাশি সৌহার্দ্যপূর্ণ ও ভালো আচরণ বজায় রাখতেন বলেও জানান তারা।
তার এভাবে মৃত্যু যেমন সহকর্মীদের মানতে কষ্ট হচ্ছে, তেমনি পুলিশের এই মেধাবী কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও করেছেন সহকর্মীরা।
বিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো. আব্দুর রহিম জানান, সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুল করিম একজন নিষ্ঠাবান, সৎ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন।
সহকর্মীদের সঙ্গেও তার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। আর তাই পুলিশের এই কর্মকর্তার অস্বাভাবিক এ মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না।
অন্য সবার মতো এই বিভাগের দায়িত্বে থাকা উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন মজুমদার এখন অনেকটাই মর্মাহত ও শোকাহত।
তিনি জানান, সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুল করিমের সঙ্গে সবার ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি যেমন সকলের সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। তেমনি দায়িত্বে প্রফেশনাল ও সৎ ছিলেন।
৯ নভেম্বর থেকে তিনি ১০ দিনের ছুটিতে যাওয়ার আগের দিন ৮ নভেম্বরও নিজ কর্মস্থলে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ৩১তম বিসিএস-এ পুলিশ ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকারী এই কর্মকর্তা খুব মেধাবী ছিলেন।
সে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও র্যাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বরিশালে মেট্রোপলিটনে যোগদান করার আগে বরিশাল জেলা পুলিশের মুলাদী সার্কেলের দায়িত্বেও ছিলেন।
মুলাদী সার্কেলে থাকা সহকর্মীরাও জানিয়েছেন, মেধাবী ও চৌকস অফিসার মোহাম্মদ আনিসুল করিমের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কখনো কোন অসঙ্গতি দেখতে পাননি তারা। সহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তারা।
এদিকে আনিসুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান-বিপিএম (বার)সহ কর্মকর্তারা। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের প্রত্যাশাও করেছেন।
অপরদিকে সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
তারা আনিসুল করিমের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আচরণ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, হাসপাতালে রোগীরে সেবার নামে এভাবে একজন ব্যক্তিকে এতো মানুষ চেপে ধরা, হাত পেছনে নিয়ে বাধা ও মারধর করার বিষয়গুলো আদৌ বিধিসম্মত নয়।
মানসিক রোগী হলে তাকে কাউন্সিলিং না করে এভাবে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দেয়া হত্যার সামিল।
২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি পুলিশ বিভাগে যোগদান করেন মোহাম্মদ আনিসুল করিম। এরপর বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগা দেন।
এক সন্তানের জনক হয়ে পরিবার নিয়ে তিনি কর্মস্থলেই বসবাস করতেন।