বরগুনার সদর উপজেলায় ক্ষমতাবলে অন্যের জমির গাছ কেটে দখল সন্ত্রাস চালিয়েছে একই এলাকার শের আলী ও তার দলবল।
জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার (৮নং) ইউনিয়নের ঢলুয়া গ্রামের নান্টু ওরফে নান্না মিয়ার (৪৫) পৈত্রিক জমির গাছ অবৈধভাবে কেটে জমি দখল করছে একই গ্রামের মোঃ শের আলী (৫৮) ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
গভীর রাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে গাছপালা কেটে ফেলে এবং জমি অবৈধভাবে দখল করে সেখানে পুকুর খনন করে তারা।
গত শনিবার (০৩ অক্টোবর) দুপুর আনুমানিক ২ টার দিকে নান্না মিয়ার নিজ বসতঘরের সামনে এঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে জানা যায়, শের আলী অবৈধভাবে নান্না মিয়ার জমির গাছ কেটে ফেলেন এবং জমি দখল করে পুকুর কাটান। এবিষয়ে শের আলীর কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনি জনসম্মুখে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হুমকি দেন।
এসময়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শের আলী আসলেই একজন সন্ত্রাসী। এর অনেক বাহিনী আছে। এদের বিপক্ষে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। নিরীহ ও গরীব নান্না মিয়ার জমির গাছ জোর করে কেটে জমিতে পুকুর কাটায়। এসব কেউ প্রতি উত্তর করলে তাকে বিভিন্ন ভয় ও মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তাই কেউ কোন কিছু বলে না।
এছাড়াও কন্যা মোসাঃ বিউটি (২৭), জামাই মো.হানিফ(৩৫) মোসাঃ আলেয়া বেগম সহ তাদের দলের অনেক সন্ত্রাসী বিভিন্ন সময়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মানুষকে জিম্মি করে নানা ভয় দেখায়।
তারা আরও বলেন, নান্না মিয়া ও তার ছেলের অনুপস্থিতিতে স্ত্রী মোসাঃ দুলু বেগম (৩৫)কে বাড়ীতে একা পেয়ে শারীরিক অত্যাচার ও মারধর করে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কিল-ঘুষি ও বুকে লাথি মারে এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানায় অভিযোগ করলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরে তারা বাধ্য হয়ে কোর্টে মামলা দায়ের করেন।
একই এলাকার সেন্টু ,মাহবুব ও হাসিব তাদের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা জানি এই জমি নান্টু ওরফে নান্না দীর্ঘ দিন ভোগ দখল করে আসছেন। হঠাৎ করে শের আলী এই জমি দাবী করেন এবং জোর করে জমির অনেক গাছ কেটে ফেলেন এবং জমি দখলের জন্যে নানা পাঁয়তারা চালান। এই ভূমি সন্ত্রাসীদের আমরা কঠিন শাস্তির দাবী করছি।
ভুক্তভোগীর স্বামী নান্না মিয়া বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত আমি ও আমার পরিবার এই জমি ভোগ দখল করে আসছি। মূলত এই জমি আমার মা মৃত জয়ফুল বিবি আমার নামে দলিল করে দেন। আমার মা ২০১২ সালে মারা যান। হঠাৎ করে আমার জমির গাছ কেটে জমি দখল করছে আমার সৎ ভাই শেরআলী। কি কারণে সে এই জমিতে হস্তক্ষেপ করছে আমার তা জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, গত ৩ অক্টোবর শনিবার আমি বাড়ীতে না থাকায় আমার সৎ ভাই শেরআলী জোর করে জমির অনেক গাছ কেটে ফেলে। এসময়ে আমার স্ত্রী বাধা দিলে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর এবং দা দিয়ে কোপ দেয়।
পরে বাড়িতে এসে আমার স্ত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পেয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে ভর্তি করেছি। আমি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এর বিচার দাবী করছি।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, এব্যাপারে আমি কিছুই জানি না এবং কেউ আমার কাছে আসেনি।
তিনি আরও বলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে, সেবিষয়েও আমি অবগত নই।