জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে দুই তরুণকে গ্রেফতারের ঘটনায় হাইকোর্টে ক্ষমা চাইল পুলিশ। আর অপরাধ না করেও গ্রেফতার দু’জন কীভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে এ মামলায় গ্রেফতার দুর্জয়কে জামিন আর জীবনকে নির্যাতনের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) হাইকোর্টে সশরীরে এসে নিজের বেঁচে থাকার প্রমাণ দিলেন চট্টগ্রামের দিলীপ রায়। যাকে হত্যার অপরাধে দিলীপের পূর্ব পরিচিত দুই তরুণ জীবন ও দুর্জয়কে ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল গ্রেফতার করে চট্টগ্রামের হালিশহর থানা পুলিশ। দুই তরুণের কাছ থেকে নেয়া হয় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও।
দিলীপ রায় বলেন, ওরা (জীবন ও দুর্জয়) আমার সাথে কাজ করতো। আমাকে দাদা ডাকতো। এরপর পুলিশ ওদের গ্রেফতার করেছে। আমাকে হত্যার অপরাধে।
পুলিশের ভয়ভীতি আর নির্যাতনের মুখে দিলীপকে হত্যা না করলেও স্বীকারোক্তি দেন বলে হাইকোর্টকে জানান দুই তরুণ জীবন ও দুর্জয়।
জীবন চক্রবর্তী বাবা জানান, কিছু সাদা পোশাকের পুলিশ এসে আমার ছেলেকে নিয়ে গেছে। ওরা (পুলিশ) আমার ছেলেকে চারদিন ধরে নির্যাতন করেছেন।
এ বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে হাইকোর্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইফুজ্জামানকে প্রশ্ন করেন, পুলিশের এত বড় ভুল কিভাবে হলো?
ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল সারওয়ার বাপ্পী বলেন, আদালত দুর্জয়কে জামিন দিয়েছেন। একই সঙ্গে এ ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির লাশের পরিচয় সনাক্তে ভুল হওয়াতেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম হালিশহর থানা এসআই মো. সাইফুজ্জামান বলেন, আদলাতেআইন সঙ্গত কারণে মামলায় যে সব কার্যাদি হয়েছে; সেগুলো আদালতকে বুঝিয়ে বলেছি।
পরে আদালত দিলীপ হত্যা মামলায় দুর্জয়কে জামিন দেন। ১ বছর ৫ মাস বিনাঅপরাধে জেল খাটার পর মুক্তি পায় দুর্জয়। অন্যদিকে জীবনকে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি নেয়ার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন হাইকোর্ট।