নারায়ণগঞ্জ সদরের সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গাফিলতির কারণেই গত ৪ সেপ্টেম্বর পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে দগ্ধদের মধ্যে পঁয়ত্রিশজনের মৃত্যু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) বিকেলে শহরের দেওভোগ এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের শেখ রাসেল পার্কে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত- গণসংলাপ বাংলাদেশ কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড এবং নাগরিকের নিরাপত্তা এ শিরোনামে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নারায়ণগঞ্জ ১শ’ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মাত্র চল্লিশ টাকা মূল্যের মরফেন ইনজেকশন ব্যবহার করলে এতগুলো মানুষের মৃত্যু হতো না। এ হাসপাতালে মরফেন ইনজেকশনের লাইসেন্স না থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্তা ব্যক্তিদের দুর্নীতির সমালোচনাও করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
দেশের এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে সরকার পরিবর্তন নয়, সরকারের সম্পূর্ণ নিয়ম পরিবর্তন করতে হবে বলে মনে করেন তিনি। পাশাপাশি সংবিধান পরিবর্তন করে তিনি ডিজিটাল আইন বাতিল করার গুরুত্বও তুলে ধরেন।
সরকারকে উদ্দেশে করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি থেকে সব পুলিশ প্রত্যাহার করে নিতে হবে। যাদের জীবনের ভয় থাকে তাদের পাহারা সামরিক বাহিনী দিক। পুলিশ আমাদের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা নিরাপদ করুক। আজকে পুলিশ পলিটিক্যাল লোকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যস্ত। তাই সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা আগে নিশ্চিত করুন। দেশের সাম্প্রতিক আলোচিত ঘটনাগুলোর ব্যাপারে চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখারও আহ্বান জানান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
ধর্ষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে যারা ধর্ষণ করেছে যৌন নিপীড়ন করেছে-যত বড় জঘন্য অপরাধ, যেই রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তারা আমাকে ভোট দিতে দেই নাই-তার অপরাধ তাদের মধ্যে খুব বেশি কি তফাৎ আছে? আজকে এর ফাঁসি দিতে হলে ওর ফাঁসি দিতে হয়। তবে আমি পরিষ্কারভাবে বলি, আমি ফাঁসির বিপক্ষে। শাস্তি হতে হবে এমন যাতে সেটির পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আজকে যারা এটি করছে, সরকার সৃষ্ট, সরকারের তাবেদার, সরকারের লোক দিয়ে তারাই ভোটের বাক্সের ডাকাতি, ব্যাংকের টাকা লুট করে, হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করে। এদেরই সরকারের প্রয়োজন আছে। সেজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দ্রুত বিচার।
গণসংহতি আন্দোলনের জেলা শাখার সভাপতি তরিকুল সুজনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন- তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং সমগীতের সভাপতি অমল আকাশ।