জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ ডা. এইচ বি এম ইকবালের স্ত্রী, ছেলেমেয়েসহ চারজনের আপিলের ক্ষেত্রে তাদের বিলম্ব মার্জনার আবেদন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। তাদের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার (১৫ মার্চ) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর ফলে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে তারা আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এই চারজন হলেন- ইকবালের স্ত্রী মমতাজ বেগম ডলি, ছেলে মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল ও মঈন ইকবাল এবং মেয়ে নওরীন ইকবাল।
আদালতে ইকবালের পরিবারের সদস্যদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার। অপরদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
পরে আদেশের বিষয়ে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ‘আপিলের ক্ষেত্রে যে বিলম্ব হয়েছে তা মার্জনা চেয়ে ইকবালের পরিবারের সদস্যরা আবেদন করেছিলেন। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এখন তারা আপিল করতে পারবেন। আর তারা জামিন আবেদন করলে আপিল করার পর সে বিষয়ে শুনানি হবে।’
এর আগে গত ৮ মার্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ইকবালের পরিবারের দণ্ডপ্রাপ্ত চার সদস্য। সেদিনই তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এর বিচারক আতাউর রহমান তাদের কারাগারে পাঠান।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৭ মে ইকবাল ও তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে এই মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ১১ মার্চ ইকবালকে পৃথক দুটি ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেন বিচারিক আদালত। এ ছাড়া আদালত তার স্ত্রী ও সন্তানদের তিন বছর করে কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন।
এই মামলায় ২০১০ সালে আত্মসমর্পণ করে পরের বছর হাইকোর্ট থেকে খালাস পান ইকবাল। তার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা তখন আত্মসমর্পণ করেননি। কিন্তু হাইকোর্ট তাদের সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করেছিলেন। হাইকোর্টের সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদও শেষ হয়ে যায় ২০১০ সালের নভেম্বরে।
এরপর ছয় বছর তারা বিষয়টি নিয়ে চুপচাপ ছিলেন। এ সময় সাজাপ্রাপ্ত হয়েও বেআইনিভাবে প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালক হন মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল। সবশেষ গত বছর বিশেষ আদালতের রায়ের ওপর নতুন করে স্থগিতাদেশ চান ইকবালের পরিবারের চার সদস্য। গত বছর ১৮ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাদের সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। পরে দুদক আপিলে গেলে তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। সর্বোচ্চ আদালতের সেই আদেশের পরই তারা বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।