মেঘনার ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক বলেছেন- আপনাদের কষ্টটা আমি হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করি। কারণ আমার বাড়িও বরিশালের নদীভাঙন এলাকা বামনাতে। আমাদের বাপ-দাদাদের সমস্ত জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। শুধুমাত্র আমার দাদার কবরের জমিটুকু অবশিষ্ট আছে। তাই যাদের জমি যায় তাদের মনে যে কি কষ্ট সেটা আমি অনুধাবন করতে পারি। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলগী মেঘনার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে প্রধান অতিথির বক্তব্য মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন- আগেরকার দিনের সরকার বা জনপ্রতিনিধিরা জনগণের কথা চিন্তা করতেন না। জনগণের দুঃখ দুর্দশার কথা, নদী ভাঙনের কথা বিচার বিবেচনা করতেন না। তাদের কাছে নদী ভাঙন আশ্চর্যজনক বিষয় ছিল। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা উপলব্ধি করেছেন নদী ভাঙন কি জিনিস। জনগণের দুঃখ দুর্দশা লাগবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছি।
বরিশাল সদর আসনে এই সাংসদ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা করার, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন, একটি সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ। আজকে বাংলাদেশ সমৃদ্ধশালী দেশ হওয়ার লক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। ২০৩১ সালের ভিতর উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের ভিতর সমৃদ্ধশালী দেশ করতে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন- আপনাদের হতাশ হবার কোনো কারণ নেই, এখানে নদী শাসন ব্যবস্থা এবং স্থায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হবে। আপনাদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই, আগামী বর্ষার আগেই এ কাজ যেন শুরু করা যায়। সে জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে কারিগরি সকল কাজ সম্পন্ন করে ৩ হাজার ২০০ কোটির টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের জন্য দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল মান্নান বলেন- এখানকার মানুষের দুঃখ দুর্দশা হলো নদী ভাঙন। এই নদী ভাঙনের কবলে পড়ে মানুষ যখন ভূমিহীন হয়ে যায় অসহায় হয়ে পড়ে তখন তার কিছুই করার থাকেনা।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী উপজেলার আলেকজান্ডার বালুরচর বালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নদীভাঙন কবলিত মানুষের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। পরে বেলা সোয়া ১টায় পর আলগী এলাকায় অস্থায়ী হেলিপ্যাডে পৌঁছলে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ মুরাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় চর আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটন চেীধুরী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী এ এম আমিনুল হক, প্রধান প্রকৌশলী জহিরুল হক, লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল মান্নানের ছেলে তাশফিক মান্নান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আব্দুল মোমিন, রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান এবং বড়খেরী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো: কামরুজ্জামান।’