নদীভাঙন প্রতিরোধ, সড়ক প্রশস্তকরণ, সেতু নির্মাণ, মাছ আহরণ, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলার বিষয়সহ নতুন সাতটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে এসব প্রকল্প।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদিত হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা শেরেবাংলা নগরের এনইসি মিলানায়তন থেকে একনেক বৈঠকে অংশ নেন।
একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেক বৈঠকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে-১. তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন ঠেকাতে ৭১২ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন থেকে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার ধুলিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপাশা রক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্প, ২. বারৈয়াহাট-হেয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প,
৩. দাউদকান্দি-গোয়লমারী-শ্রীরায়েরচর-মতলব উত্তর জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, ৪. খুলনা সড়ক জোনের অধীন মহাসড়কে বিদ্যমান সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন কংক্রিট সেতু বা বেইলি সেতুর স্থলে কংক্রিট সেতু নির্মাণ প্রকল্প, ৫. গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে পাইলট প্রকল্প, ৬. কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প এবং ৭. ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ‘তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন থেকে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার ধুলিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপাশা রক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অবকাঠামো, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কৃষি-অকৃষি জমি, ফসল এবং জনসাধারণের ঘরবাড়ি রক্ষা সম্ভব হবে। চলতি মাসে শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।
জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার পূর্ব দিকে তেঁতুলিয়া নদী, উত্তরে কারখানা নদী এবং পশ্চিমে লোহানিয়া নদী। এর বাইরেও অনেক ছোট ছোট খাল-নদীও আছে।
তিনটি বড় নদীর ভাঙনে বাউফল উপজেলার মানচিত্র প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। বিশেষ করে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপাশা থেকে শুরু হয়ে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার ধুলিয়া লঞ্চ ঘাটের উজানে এবং ভাটিতে বিস্তীর্ণ এলাকা তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙনের মুখে রয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় সাড়ে সাত কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ এবং ২ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদী ভাঙনের হাত থেকে এলাকাটিকে রক্ষার পাশাপাশি মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন।
একনেক বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন, মৎস্যমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক উপস্থিত ছিলেন।