যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সব বিভাগের সদস্যরা তাদের নারী সহকর্মীদের নগ্ন ছবি অনলাইনে শেয়ার করেছিল তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
মার্কিন নৌবাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমান ও সাবেক উভয় সেনা সদস্যরাই ফেইসবুকে নারী সহকর্মীদের নগ্ন ছবি শেয়ার করে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর নৌবাহিনী এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, অন্যান্য শাখার কর্মকর্তারাও শত শত নগ্ন ছবি এক মেসেজ বোর্ডের মাধ্যমে শেয়ার করেছে। পেন্টাগন এ ধরনের আচরণকে তাদের মূল্যবোধের সঙ্গে ‘সংগতিহীন’ বলে বর্ণনা করেছে।
জানা গেছে, নারী সহকর্মীদের নগ্ন ছবি শেয়ার করতে পুরুষ সেনা সদস্যরা বেনামে ছবি জমা করার একটি ওয়েবসাইটে একটি মেসেজ বোর্ড ব্যবহার করে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা প্রথমে নারী সেনা সদস্যদের অনলাইন পাতা থেকে ছবি নিয়ে মেসেজ বোর্ডে পোস্ট করে এবং অন্যদের জিজ্ঞাসা করে, তাদের কাছে ওই নারী সেনার কোনো নগ্ন ছবি আছে কি না? তারপর অন্যরা ছবি পোস্ট করে।
কখনও কখনও নারী সেনাদের ছবির পাশাপাশি তাদের নাম, তারা কোথায় কাজ করছে এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্যও দেয়া হয়।
পেন্টাগনের প্রধান জেমস ম্যাথিস শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে সদস্যদের মধ্যে যে শ্রদ্ধার অভাব, তাদের মধ্যে সহকর্মীদের জন্য মর্যাদা ও মানবতাবোধের অভাব রয়েছে এ ঘটনা তারই প্রমাণ বহন করে। এ ঘটনা সেনাবাহিনীর মৌলিক মূল্যবোধের গুরুতর লংঘন।’
‘আমাদের মূল্যবোধ নিয়ে কোনরকম প্রশ্ন উঠুক এরকম কোন কিছু আমরা সহ্য করবো না। যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই বা শত্রুপক্ষকে হারানোর যে ক্ষমতা আমাদের আছে সেটিকে আমরা এ ধরনের আচরণের কারণে নষ্ট হতে দিবো না’- বলছিলেন সাবেক এই জেনারেল।
এর আগে একটি তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ফেইসবুকে মার্কিন নৌ-সেনারা এমন ছবি শেয়ারের কাজ করছে।
আর এ ঘটনা প্রকাশের পর ফেইসবুকে ‘মেরিনস ইউনাইটেড’ নামে প্রায় ৩০ হাজার সদস্যের একটি গ্রুপের কার্যক্রম সম্প্রতি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন নৌবাহিনীর প্রধান জেনারেল রবার্ট নেলার এমন ঘটনাকে ‘বিব্রতকর’ বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘নৌ-সেনাদের বিরুদ্ধে তাদেরই সহকর্মীদের অসম্মানিত করার অভিযোগের কথা শোনার পর মনে হচ্ছিলো- একজন সত্যিকারের বীর বা যোদ্ধা এ ধরনের আচরণ করতে পারেন না।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যৌন হয়রানি ও মানসিক বিকার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে তারা একটি নীতি নির্দেশিকা’ দেবে।’