সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ তিন আসামিকে সাতদিন এবং চার আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত। সে মতে প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজার র্যাব-১৫ কর্তৃপক্ষ। তবে আদালতের রিমান্ড মঞ্জুরের নথিপত্র এখনও কারাগারে পৌঁছায়নি। ফলে রিমান্ডে নেয়া হয়নি আসামিদের। কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান বলেন, আদালতের আদেশপ্রাপ্ত আসামিদের রিমান্ড প্রক্রিয়া শুরু করতে পূর্ণ প্রস্তুতি নেয়া রয়েছে। নথি কারাগারে পৌঁছালেই সে অনুযায়ী আমরা কাজ শুরু করব।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, সিনহা হত্যা মামলার আসামিদের রিমান্ডে নিতে কোনো ধরনের অনুমতি এখনও হাতে পৌঁছেনি। আদালত থেকে আদেশের কপি হাতে আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) বিকেলে মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ওসি প্রদীপসহ সাত আসামিকে গ্রেফতার করে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হলে প্রথমে জামিন শুনানি হয়। জামিন না মঞ্জুর হলে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মেজর মেহেদী হাসান।
শুনানি শেষে ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতকে সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া বাকি চার আসামিকে দুদিন করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ পাওয়া চারজনকেও রিমান্ড মঞ্জুর করার জন্য রাতে র্যাবের পক্ষ থেকে আরও একটি পিটিশন দায়ের করার কথা শুনেছি। তবে আদালত আদেশ দিয়েছেন কিনা জানি না।
আসামিদের হাজির করা কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের কর্মকর্তা (পেশকার) আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রথম আদেশই বহাল রয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। নতুন কোনো নির্দেশনা রাতে দেয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাত পৌনে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শ্যামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ সাত পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত অন্যরা হলেন- টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদ্য সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।
শুক্রবার (৭ আগস্ট) রাত পৌনে ১০টার দিকে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।