সোমবার , ৬ এপ্রিল ২০২০ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

৬ মাসের শিশু আর ১০২ বছরের বৃদ্ধার চেহারায় আশার আলো দেখছে ইতালি

প্রতিবেদক
Alltime BD News24 .com
এপ্রিল ৬, ২০২০ ৩:৫৭ পূর্বাহ্ণ

দুইজন ব্যক্তি। একজন মাত্রই পৃথিবীতে এসেছে। বয়স হলো মাত্র ৬ মাস। অন্যজন পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার সময় হয়ে এসেছে। বিদায় নিতে পারতো বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরও। কিন্তু ১০২ বছর বয়সী সেই বৃদ্ধা দিব্যি বেঁচে গেলে করোনার ভয়াল থাবা থেকে। ইতালিতে যাকে এখন ‘অমর’ উপাধিও দেয়া শুরু হয়েছে। যেমনটা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বেঁচে গেলো ৬ মাস বয়সী শিশুটিও। খবর ডেইলি মেইলের।

৬ মাস বয়সী শিশুটির নাম লিওনার্দো এবং ১০২ বছর বয়সী বৃদ্ধার নাম ইতালিকা গ্রনদোনা। দু’জনই ইতালির উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা। যে এলাকাকে বলা হচ্ছে ইউরোপে করোনাভাইরাসের ‘গ্রাউন্ড জিরো’।

তবে খুব সহজে এই দু’জন কিন্তু করোনাভাইরাসকে পরাজিত করতে পারেনি। দীর্ঘ লড়াই হয়েছে তাদের মধ্যে। জীবন নিয়ে বেশ টানাটানি করেছে কোভিড-১৯। কিন্তু মহামারিতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত ইতালিতে যখন একের পর এক লাশের সারি তৈরি হয়েছে, তখন তুমুল লড়াইয়ের পর প্রাণঘাতি করোনাকেই হার মানিয়ে দিয়েছে লিওনার্দো এবং ইতালিকা গ্রনদোনা।

ছোট্ট লিওনার্দো করোনার সঙ্গে লড়াই করেছে এক-দুই সপ্তাহ নয়, টানা ৫০দিন। উত্তর ইতালির ল্যাম্বোর্ডি এলাকার করবেট্টা মিউনিসিপ্যালিটিতে জন্মগ্রহণ করে লিওনার্দো। জন্মের ৪ মাস যেতে না যেতেই প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় সে। ইতালিতে করোনার হানা দেয়ার শুরুতেই আক্রান্ত হয়ে যায় শিশুটি।

এরপর হাসপাতালের বিছানায় তার সঙ্গে করোনার লড়াই চলতে থাকে। ৫০ দিনের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর যখন লিওনার্দো করোনাকে পরাজিত করে ঘরে ফিরতে পারলো, তখন স্থানীয় মেয়র মার্কো ব্যালারিনি তাকে উপাধি দিলেন, ‘দ্য ওয়ান্ডারফুল ফেইস অব হোপ।’ একই সঙ্গে ছোট্ট লিওনার্দোকে ধন্যবাদও জানালেন যে, উত্তর ইতালিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকার স্পৃহা পূনর্জাগরণের জন্য।

মেয়র বলেন, ‘আজ আমাদের মুখে হাসি ফোটার অনেক বড় একটি উপলক্ষ তৈরি হয়েছে। খুব খুশিও লাগছে এবং মনে করতে পারছি যে আমরা একটা সমাজের অংশ। আজ আমরা একটি অসাধারণ আশা জাগানিয়া মুখমন্ডল দেখতে পাচ্ছি। করবেত্তা তাকে স্বাগত জানাচ্ছে যে, আজই মাত্র তাকে করোনাভাইরাসের বিপক্ষে জয়ী হিসেবে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হচ্ছে।’

পরক্ষণে তিনি বলেন, ‘লিওকে ধন্যবাদ। একই সঙ্গে তোমার মা-বাবাকেও ধন্যবাদ। যারা কখনোই তোমার ব্যপারে আশা ছেড়ে দেয়নি। তারা করবেত্তার সমস্ত মানুষের হৃদয়কে উষ্ণ করে দিয়েছেন। করবেত্তাকে অনেক শক্তিশালী করেছেন।’

শিশুটির মা স্থানীয় মিডিয়াকে বলছেন, ‘আমি তাকে দেখে খুব অবাক হয়ে যেতাম। বিশেষ করে রাতে। আর কোনো মায়ের যেন এ ধরনের কোনো অভিজ্ঞতা না হয়।’

শিশুটির মা জানান, তারা সন্তান যখন খুব জ্বরে ভুগতে ভুগতে অসুস্থ এবং হার্টরেট খুব কমে গিয়েছিল, তখন তার বেঁচে থাকার আশা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তারওপর, যখন তার বাবার এক কলিগ করোনা পজিটিভ হিসেবে ধরা পড়ে, তখন আমরাও নিশ্চিত হই, সে করোনা আক্রান্ত। তবে স্থানীয় হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা করে ছোট্ট লিওনার্দোকে সুস্থ করে তোলার।

অন্যদিকে ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় আরেক শহর জেনোয়ার সান মার্টিনো হাসপাতালে ১০২ বছর বয়সী ইতালিকা গ্রনদোনার করোনাভাইরাসকে পরাজিত করে সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনা বেশ তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। এই বৃদ্ধাও দীর্ঘ লড়াই করেন করোনার সঙ্গে। ২০ দিন হাসপাতালের বিছানায় কাটাতে হয়েছিল তাকে।

মার্চের শুরুর দিকেই করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়েই হাসপাতালে আসেন টেস্ট করার জন্য। করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। হার্টের সমস্যাও সঙ্গী ছিল তার। কিন্তু দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেলেন তিনি। জেনোয়ার ডাক্তাররা বলেই বসেছেন, ‘এই নারীর কাছে করোনাভাইরাস পরাজিত হয়েছে।’

ডাক্তাররা তার নিক নেমটাই (উপনাম) পরিবর্তন করে দিয়েছে। তার নাম দিয়েছেন ‘হাইল্যান্ডার (পর্বতবসী)- দ্য ইমোরটাল (অমর)।’ সিএনএনকে ডাক্তার ভেরা সিকবালদি বলেন, ‘তিনি (গ্রনদোনা) সব বয়স্ক মানুষের অনেক বড় এক প্রতিনিধি এবং তিনি বয়স্কদের সামনে নিজেকে আশার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে পেরেছেন।’

ইতালির ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুসারে, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর মৃতদের গড় বয়স হচ্ছে ৭৮। এর মধ্যে ইতালিকা গ্রনদোনার সুস্থ হওয়া হচ্ছে বিরল একটি ঘটনা।

ইতালিকা গ্রনদোনার সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনায় ডাক্তাররাও নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। তাদের গবেষণায় ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে এতে। তারা আরও গভীর গবেষণা করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন এরইমধ্যে। সিকবালদি বলেন, ডাক্তাররা গ্রনদোনার বেঁচে ওঠার বিষয়ে একেবারেই আশাবাদী ছিলেন না।

(Visited ৩ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি