শামীম আহমেদ, ॥ বরিশাল বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আওতাধীন বিভিন্ন জেলা শহরে অফিস থাকা সত্বেও সংকট রয়েছে লোক ও জনবল। বরিশালের কার্যলয় থেকে কর্মকর্তারাই জোড়াতালি দিয়ে ভোক্তা জনসাধারনকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
কর্মকর্তা ও জনবল সংকট থাকা সত্বেও বরিশাল বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তাদের নিয়ে ভোক্তা ও নাগরীকদের জন্য বাজারের ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা করতে চলছে তাদের কার্যক্রম।
বরিশাল নগরী সহ বিভাগের জেলা শহর ও উপজেলা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান,হাট-বাজার,শপিংমলগুলোতে পণ্যের মোড়ক ইত্যাদি ব্যবহার না করা, ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্য পণ্যের উপর ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করা, খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যে ভেজাল মিশ্রন, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎাদন, প্রতিশ্র“ত পণ্য সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় না করার অপরাধে ২০১৯ এর ১ লা জুলাই থেকে ২০২০ অর্থ বছরের ফেব্রয়ারী মাস পর্যন্ত ৮ মাসে বিভাগের ৬ জেলার ৬ শত ৪৪টি বাজার তদারকিমূলক অভিযান চালিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে বিভিন্ন ধারা লংঘনের অপরাধে দোষী প্রমানিত হওয়ার কারনে ১ হাজার,৫শত ১৮টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৬৫ লক্ষ,৫২ হাজার, ৫শত টাকা অর্থে দন্ডে দন্ডিত করেছে বরিশাল বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অপরদিকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যরনার শিকার হওয়া ভোক্তারা অধিকার সংরক্ষণ দপ্তরে ৬৭ টি প্রতিকারমূলক অভিযোগ দায়ের করা হয়। এসব অভিযোগের পেক্ষিতে মাঠ প্রর্যায়ে তদন্তে নেমে ভোক্তা কর্মকর্তারা ২২টি অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় সেসকল প্রতিষ্ঠান থেকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের মাধ্যমে ১ লক্ষ ৯৩ হাজার ৫ শত টাকা জরিমানা করে আদায় করা হয়।
এর মধ্যে জরিমানা আদায় করা অর্থ থেকে ৪৮ হাজার,৩ শত ৭৫ টাকা অভিযোগকারী ২২ জন ভোক্তাদের ক্ষতিপূরণ হিসাবে ২৫ পার্সেন্ট টাকা তাদের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
অবশিষ্ট বাকি আদায়কৃত অর্থ সরকারী কোষাগাড়ে জমা প্রদান করে বরিশাল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি এসময় ১৮ টি অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তা বাতিল করার করা হয়। একই সময় অভিযোগ দায়ের করা ৭টি অভিযোগ উভয়ের মধ্যে আপোষ-মিমাংশার মাধ্যমে নিস্পত্তি ও সমাধান করে দেওয়া হয়।
বরিশাল জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে নিজেদের লোক ও জনবল সংকট থাকার পরে তারা বিভাগের ৬ জেলা ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে জনগণকে সচেতনতা সৃষ্টি করার কার্যক্রম অংশ হিসাবে প্রচার প্রচারনা করা সহ লিফলেট বিতরন ও বনিক সমিতি,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের নিয়ে গণশুনানী ও ভোক্তা আইন সংক্রান্ত বিষয়ের উপর ৭৩টি সভা-সেমিনার করেছে বরিশাল বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এবিষয়ে বরিশাল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল জেলা কার্যলয়ের সহকারী পরিচালক শাহ্ মোঃ শোহেব হোসাইন বলেন প্রত্যেক জেলা শহরের দপ্তরগুলোতে ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ১জন করে সহকারী পরিচালকের প্রয়োজন থাকা সত্বেও অনেক জেলা শহরে দপ্তর আছে কার্যক্রম পরিচালনা করার লোক ও জনবল সংকটের মুখে শুণ্য হয়ে পড়ে থাকার কারনেই অনেক ক্ষেত্রে কার্যক্রমের গতি মন্তর হয়ে পড়ার কারনে ভোক্তাÍা সেবার সুফল পেতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
এছাড়া পটুয়াখালী জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণেরে সহকারী পরিচালক নিজ জেলা ও উপজেলার কাজের পরেও তাকে অতিরিক্ত দায়ীত্ব পালন করতে বরগুনা জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তদারকি সহ অভিযান পরিচালনা করতে হয়।
অন্যদিকে পিরোজপুর জেলা শহরে দপ্তর আছে জনবল না থাকার কারনে উক্ত দপ্তরটি শুণ্য হয়ে পড়ে রয়েছে। তাই তিনি মনে করেন ভোক্তাদের নাগরীক সেবার প্রয়োজনে বরিশাল বিভাগের জেলা শহরে সহকারী পরিচালক নিয়োগ প্রদানের পাশাপাশি উপজেলা শহরে জনস্বার্থে দপ্তরের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
তিনি এসময় আরো বলেন বরিশাল মহানগরী সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় করোনাকে পুজি করে মাস্ক ব্যাবসায়ীরা ভোক্তাদের জিম্মী করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার করা কথা শোনা যাচ্ছে এব্যাপারে বাজারে তদারকি সহ অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়া ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে বরিশাল বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।