বরিশালে আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া সংঘবদ্ধ চোর চক্রের অপর সদস্যদেরও গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রেখেছে নগর পুলিশ। এরই মধ্যে তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন তারা।
আটককৃতরা হল- চোর চক্রের অন্যতম হোতা মংলার সিগনাল টাওয়ার এলাকার বাসিন্দা হারুন হাওলাদার ও রাজিয়া দম্পতির ছেলে ইউনুস হাওলাদার (২৯), চক্রের সদস্য বরিশাল নগরীর পশ্চিম কাউনিয়া এলাকার কাঞ্চন আলী ও জেসমিন বেগম দম্পতির ছেলে আল আমিন (২১) ও খুলনার ফলতলা থানাধীন আলকা-দামুদার এলাকার আহমেদ দপ্তরীর ছেলে রবিউল ইসলাম (৪৫)।
বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর জোন) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার খায়রুল আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ‘দীর্ঘ দিন ধরে একটি মোটর সাইকেল চোর চক্র বরিশাল নগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় মোটর সাইকেল চুরি করে আসছিল। তারা বরিশাল থেকে মোটর সাইকেল চুরি করে গোপালগঞ্জ-খুলনা সড়ক হয়ে পালিয়ে যেতে।
তিনি বলেন, ‘চক্রের একটি অংশ দিনে কিংবা রাতের আধারে মোটরসাইকেল চুরি করে দ্রুত সময়ের মধ্যে চক্রের অন্য গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করত। ওই গ্রুপটি চোরাই মোটরসাইকেল খুলনা নিয়ে কৌশলে বিক্রি করে দিতো। এ কাজটি করত খুলনার বাসিন্দা দুই সহোদর। দীর্ঘ দিন ধরেই পুলিশ চক্রটিকে খুঁজে বেরাচ্ছিল।
উপ-পুলিশ কমিশনার খায়রুল আলম বলেন, ‘সর্বশেষ গত ২২ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টার মধ্যে যে কোন সময় বরিশাল নগরীর পশ্চিম কাউনিয়া হাজেরা খাতুন সড়কের লাবু খানের বাড়ির ক্লোবসিবল গেটের তালা ভেঙে একটি এফ জেড-এফআই মোটরসাইকেল চুরি করে।
ওই ঘটনায় মহানগরীর কাউনিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন মোটরসাইকেলের মালিক মোকলেসুর রহমান খানের ছেলে লাবু খান। ওই ডায়েরীর সূত্র ধরে চুরি হওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার ও চক্রের সন্ধানে অভিযানে নামে কাউনিয়া থানা পুলিশ।
এর ধারাবাহিকতায় বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর জোন) খায়রুল আলমের প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি চক্রের সদস্য পশ্চিম কাউনিয়ার আল আমিনকে আটক করে।
এ অভিযানে ছিলেন কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হিরন্ময়, উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন, এসআই শম্ভু ও এসআই আনোয়ারসহ তাদের টিম। পরে আটককৃত রবিউলের দেয়া স্বীকারক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় দ্বিতীয় দফা অভিযানে নামে পুলিশের টিম।
তারই অংশ হিসেবে বুধবার ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কৌশলগতভাবে চোর চক্রের হোতা মংলার ইউনুস হাওলাদার ও তার সহযোগী রবিউলকে চোরাই মোটরসাইকেল সহ আটক করে। তবে এসময় অপর এক সহযোগী পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘এটি আমাদের একটি বড় সফলতা বলে আমি মনে করি। কেননা মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাটি পুরোপুরি ক্লু-লেস ছিল। আমাদের টিমের চৌকশতার কারনেই ক্লু-লেস চুরির ঘটনাটির জট খুলেছে। পাশাপাশি বড় মোটরসাইকেল চোর চক্রকে সনাক্ত করতে পেরেছি।
তাছাড়া চক্রটির মুল হোতা ইউনুসের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬টি মামলার খবর পাওয়া গেছে। যার মধ্যে একটি অস্ত্র মামলা। বাকিগুলো সব চুরি মামলা। তার অন্যান্য সহযোগিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) খায়রুল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আবুল কালাম আজাদ, সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল হালিম, কাউনিয়া থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. আজিমুল করিম, থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হিরন্ময় প্রমুখ।