মেদ ঝরানোর জন্য ডায়েটে ফল রাখা প্রয়োজন। সব ডায়েটিশিয়ানরা এ কথা বললেও, এই সব ফলের তালিকায় এত দিন বিশেষ জায়গা পায়নি আঙুর। রোগা হতে চাইলে আঙুরের মতো মিষ্টি ফল থেকে দূরে থাকাই ভালো— এত দিন এমনটাই মনে করা হত।
তবে গবেষকরা কিন্তু এখন অন্য কথা বলছেন। তাদের মতে, যদি কারও অত্যধিক ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তা হলে অবশ্যই ডায়েটে আঙুর রাখা প্রয়োজন। কারণ? এই ফলে থাকা পলিফেনল নাকি শরীরে মেদ জমতে দেয় না।
পলিফেনল সংক্রান্ত এই তথ্য উঠে এসেছে ‘ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনা গ্রিনসবোরো’র দু’টি গবেষণায়। ‘নিউট্রিশনাল বায়োকেমিস্ট্রি জার্নাল’-এ এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে। দু’টি গবেষণাই বলছে, স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়ার ফলে শরীরে যে ক্ষতি হয় আঙুরের মধ্যে থাকা পলিফেনল তা রুখতে পারে।
ধরা যাক, অতিরিক্ত ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াটা কারও অভ্যাস। প্রথম গবেষণাটি বলছে, তাঁর ডায়েটের ৩ শতাংশ যদি আঙুর হয় এবং ১১ সপ্তাহ ধরে তিনি এমনটা মেনে চলেন তবে শরীরে ফ্যাট জমার হার কমে যেতে পারে।
পাশাপাশি সেখানে বলা হয়েছে, আঙুরের মধ্যে থাকা পলিফেনল অন্ত্রে উপকারি ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে কিছু অপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও কমিয়ে দেয় পলিফেনল। ফলে খাদ্যনালীতে পরিপাকক্রিয়া ভালো হয় এবং মেদও জমে না।
দ্বিতীয় গবেষণাটিও আঙুরের পক্ষে গেছে। সেখানে গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের ১৬ সপ্তাহ ধরে অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত ডায়েটে রাখেন। এর মধ্যে ছিল স্যাচুরেটেড ফ্যাট, বিফ এবং মাখন। সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল আঙুর।
এ ক্ষেত্রেও দেখা গেছে, আঙুর খাওয়ার ফলে তাদের শরীরে ফ্যাট জমার মাত্রা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তবে আঙুর খেলে মেটাবলিজম বা পরিপাকক্রিয়া ভাল হয় এমন কোনো প্রমাণ দ্বিতীয় পরীক্ষায় পাওয়া যায়নি।
দু’টি গবেষণারই মুখ্য গবেষক মাইকেল ম্যাকটশ বলেন, ‘পলিফেনল শরীরে মেদ জমতে বাধা তো দেয়ই, পাশাপাশি অতিরিক্ত ফ্যাট খাওয়ার ফলে উদ্ভূত বেশ কিছু উপসর্গ রুখতে পারে। আঙুরের মধ্যে এই পলিফেনল পাওয়া যায় প্রচুর মাত্রায়।’