ঝালকাঠিতে সাবেক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে (১৩) অপহরণের পর আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের ঘটনা মোবাইল ফোনে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়েছে ওই কিশোরীকে।
তবে প্রভাবশালী সাবেক ইউপি সদস্য এমদাদুল হক থলপহরীর ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার পরিবার। এমদাদুল হক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ঝালকাঠি সদর থানায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে মামলা করেছন বলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান জানিয়েছেন।
নির্যাতিত কিশোরী জানায়, গত ১৫ নভেম্বর সদর উপজেলার বাউকাঠি গ্রামের বাড়ি থেকে পিপলিতা গ্রামে ফুপুর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিল সে। এ সময় নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য প্রতিবেশী এমদাদুল থলপহরী তাকে জোর করে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সংলগ্ন বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনা এমদাদুলের আত্মীয় বর্ষা নামে একটি মেয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে।
এমদাদুল ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন এবং কাউকে না বলার জন্য চুপ থাকতে বলেন। এক পর্যায়ে ঘটনা এলাকায় জানাজানি হতে পারে আশঙ্কায় এমাদাদুল ওই কিশোরীকে বাখরগঞ্জ থানার বোয়ালিয়া নামক স্থানে ফাতেমা নামের এক নারীর বাড়িতে আটকে রাখেন।
ফাতেমা নামের ওই নারী অন্য পুরুষ এনে কিশোরীকে নির্যাতন করাতেন বলে অভিযোগ করা হয়। ঘটনার দিন রাতে ভুক্তভোগী কিশোরী বাড়ি না ফিরলে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা।
গত ৫ ডিসেম্বর ওই কিশোরী বোয়ালিয়া থেকে কৌশলে পালিয়ে ঝালকাঠি শহরের পূর্ব চাঁদকাঠি এলাকায় আসলে, স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। মেয়েটি বিস্তারিত জানালেও পুলিশ মামলা না নিয়ে ৬ ডিসেম্বর রাতে তাকে তার বাবার কাছে বুঝিয়ে দেয়।
এমদাদুল থলপহরী প্রভাবশালী হওয়ায় ধর্ষণের শিকার মেয়েটি ও তার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা না করতে এমদাদুলের লোকজন ওই কিশোরীর পরিবারের লোকজনকে চাপ দিয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
ঝালকাঠি থানার ওসি খলিলুর রহমান জানান, মেয়েটি যখন থানায় ছিল তখন ধর্ষণের কোনো অভিযোগ করেনি। বিভিন্নজনের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ শুনে মেয়েটির বাড়িতে অফিসার পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা যাচাই করেছি। রাতেই ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান ওসি।