গল্প নয়, সত্যি। ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ ফুট প্রশস্তের নির্মিত রাস্তার কার্পেটিং হাত দিয়ে টেনে তুলছেন স্থানীয় জনগণ। নিম্নমানের কাজ করতে গিয়ে জনতার তোপের মুখে পড়েন ঠিকাদারের লোকজন। পরে সেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছে জনগণ। পুনরায় সড়ক নির্মাণের জন্য স্থানীয় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহসহ সেতু মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকার ভুক্তভোগী জনগণ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় আগৈলঝাড়া উপজেলা সদর থেকে রাজিহার হয়ে ঘোষেরহাট পর্যন্ত বরিশাল অংশে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি কালভার্টসহ ১৮ ফুট প্রশস্তের ১২ দশমিক ৭০ কি. মি. সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কাজ করছে বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মাহফুজ খান। সওজ বিভাগের একই কার্যাদেশে ওই প্রতিষ্ঠান আগৈলঝাড়া উপজেলায় বিভিন্ন সড়ক উন্নয়নে আরও প্রায় ৫৮ কোটি টাকার প্রকল্পর কাজ বাস্তবায়ন করছে।
বরিশালের উত্তরে ২০ কিলোমিটার অংশে ১নং খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বাকাই সুধীর মেম্বরের বাড়ির সামনের ব্রিজ থেকে বাকাই ফিরোজার মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের কাজ করা হচ্ছে। এই কাজ নিম্নমানের হয়েছে বলে জানান ১নং ওয়ার্ড সদস্য সুধীর রঞ্জন ও ৩নং ওয়ার্ড সদস্য কাওসার আহম্মেদ মানিকসহ বিক্ষুব্ধ লোকজন।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, স্থানীয় লোকজন সংবাদ কর্মীদের উপস্থিতি রাস্তার কার্পেটিং হাত দিয়ে টেনে তুলে দেখাচ্ছেন। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট শামসুল হকের উপস্থিতিতে বুধবার রাস্তা ঢালাই করা হয়। তাকে ভাল করে প্রাইম করে কার্পেটিং ও সিলকোড করার অনুরোধ জানালেও তা কোন কাজে আসেনি। নিম্নমানের কাজ করার একপর্যায়ে ঠিকাদারের লোকজন জনগণের তোপের মুখে পড়ে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার মাহফুজ খান বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। লেবাররা সাইট চুক্তিতে কাজ করে। সাইট বুঝিয়ে দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ হয়। কিন্তু, প্রতিষ্ঠানের সুনাম-দুর্নাম নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা নেই। নিজে প্রকল্প সাইট পরিদর্শন করে কাজের মান খারাপ হলে পুনরায় প্রাইম করে নতুন করে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।
প্রকল্পর কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা সড়ক বিভাগের এসও মো. আবু হানিফ মিয়া ফোনে এই প্রতিনিধিকে বলেন, কাজ নিয়ে সমস্যার কথা তিনি শুনেছেন। জুন মাসে ব্যস্ততার জন্য প্রতিদিন তিনি সাইটে যেতে পারছেন না। কাজের মান খারাপের জন্য ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট, ঠিকাদারের লোকজনকে তিনি ভর্ৎসনা করেছেন। সাইট লেবার সর্দার বাবুল কন্টাকে কাজ করেন। তাকে এ জন্য শাসানো হয়েছে।
বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা জানান, বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। কাজের কোয়ালিটির ব্যাপারে কোন আপোষ করা হবে না। কাজ খারাপ হলে ঠিকাদারকে পুনরায় কাজ করতে হবে। সময় সুযোগ করে তিনি সাইট পরিদর্শন করবেন বলেও এই প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেন।