সেবা পক্ষ চলাকালীন সময়ে বরিশাল নদী বন্দরের টার্মিনাল ভবনের সামনে যাত্রীছাউনিতে থাকা বসার চেয়ার উধাও হয়ে গেছে। ফলে ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে বরিশাল থেকে রাজধানীমুখি যাত্রীদের।
অস্থায়ীভাবে নির্মিত ৫ শত জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন যাত্রী ছাউনিতে পর্যাপ্ত চেয়ার থাকলেও ঈদুল ফিতরের পর থেকে তা আর দেখা যায়নি। তবে এ নিয়ে গত ২ দিনে সমস্যা দেখা না দিলেও আজ বিকেল থেকে সমস্যা পড়তে হয় ঢাকামুখি যাত্রীদের।
অনেক যাত্রীই তার স্বজনদের পল্টুন, টার্মিনাল ভবন এমনকি টার্মিনাল এলাকার বাহিরেও খোলা জায়গায় স্বজনদের দার করিয়ে রেখে লঞ্চে জায়গা ঠিক করার জন্য গেছেন। কারণ যাত্রী ছাউনিতে এখন মোটরসাইকেল আর কুকুরের আবাসস্থল হয়েছে।
ঢাকাগামী লঞ্চের যাত্রী জিয়াউল ইসলাম জানান, ঈদের আগে ফেরার সময় বন্দর ভবনের বাহিরে ছাত্রী ছাউনিতে চেয়ার ছিলো। ফলে মধ্যরাতে এসেও বসার সুযোগ পেয়ে ভোর পর্যন্ত নিরাপদে অপেক্ষা করতে পেরেছি। আর যাওয়ার সময় এখন সেখানে চেয়ার না পেয়ে স্বজনদের দার করিয়ে রেখেছি। লঞ্চে জায়গা পাবো তারপর তাদের সেখানে নিতে পারবো। অযথা পল্টুনে নিয়ে ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠিলর মধ্যে ফেলতে চাই না।
অপর এক যাত্রী নুরুল আমিন বলেন, আকাশ মেঘলা, দুপুরের পর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও হয়েছে। যদি মুষলধারে বৃষ্টি নামে তবে বেশিরভাগ যাত্রীদের যাত্রী ছাউনিতেই যেতে হবে। তখন দাড়িয়ে থেকে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই। চেয়ার যদিও দেয় তবে ঈদ যাত্রা শেষ হওয়ার আগেই তা নিয়ে যাওয়ার কোন মানে আছে।
এ বিষয়ে বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, যাত্রীদের যেভাবে চাপ বাড়ছে তাতে পল্টুনে পা ফেলার জায়গা থাকবে না। আর বৃষ্টি হলে বসার জায়ঘা না থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। তাই বিষয়টি অনুধাবন করার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট (প্রকৌশল) বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাকরি।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন অর রশিদ বলেন, বিগত দিনের ধারা অব্যাহত রেখে ঈদের আগে থেকে বন্দর ভবনের বাহিরে যানবাহনের পার্কিং স্থানে অস্থায়ী যাত্রীছাউনি বানানো হয়েছে। যেখানে ঈদের ৭ দিন আগে থেকেই চেয়ার দেয়া হয়েছিলো। যাতে যাত্রীরা মধ্যরাতে লঞ্চ থেকে নেমে নিরাপদে বসতে পারেন। আর এখন যাত্রীরা সরাসরি লঞ্চে গিয়ে উঠছেন, তাই সেখানে চেয়ার দেয়া হয়নি।
এদিকে বরিশালে সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন রয়েছে, সাথে থেমে থেমে কয়েকবার বৃষ্টিপাতও হয়েছে। এরমধ্যেই মানুষ বিভিন্ন বাহনে চড়ে রাজধানি অভিমুখে ছুটছে।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরের দুদিনের থেকে আজ শনিবার (০৮ জুন) সকাল থেকেই যাত্রীদের আনোগোনা শুরু হয়ে যায় বরিশালের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও নদী বন্দর এলাকায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যাত্রীদের চাপও বেড়ে যায়। তবে প্রথা অনুযায়ী বরিশাল তথা দক্ষিনাঞ্চল থেকে নৌ-রুটে সবথেকে বেশি যাত্রী চলাচল করায় নদী বন্দর ও লঞ্চঘাটগুলোতে যাত্রীদের চাপ বেশি লক্ষ করা গেছে।
বাড়তি যাত্রীর চাপ সামাল দেয়ার জন্য আগাম সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বরিশাল নদী বন্দর ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদিকে বিআইডব্লিউটিএ গত ৩০ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিশেষ সেবা পক্ষ চালু করছে। যারদরুন যাত্রীরা নদী বন্দর ও লঞ্চঘাট এলাকা থেকে বিভিন্ন স্তরে যাত্রীদের নানান সেবা দেয়া হচ্ছে।