পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম দিনে বরিশাল শহরের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নেমেছে মানুষের ঢল। বুধবার বিকেল থেকেই নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের এ ঢল নামে। বিশেষ করে শিশুদের পদচারণায় মুখর বিনোদন কেন্দ্রগুলো। যা অব্যাহত থাকবে ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত।
নগরীর প্রধান বিনোদনকেন্দ্র যেমন কীর্তনখোলার তীর ত্রিশ গোডাউন, বঙ্গবন্ধু উদ্যান, শিশুপার্ক ও মুক্তিযোদ্ধা পার্কে সকাল থেকেই মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। রঙ বেরঙের পোশাক পড়ে পরিবার পরিজন, তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোরসহ সকল শ্রেণির মানুষ ছুটে আসছেন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।
ঈদের দিন বুধবার বরিশালের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বন্ধু বান্ধবের সাথে ছবি তোলা, প্রিয়জনের সাথে হাঁটা, নৌকায় ঘুরে বেড়ানো নিয়ে যেন মেতে উঠেছে। পানিতে পা ডুবিয়ে কেউ চলছে কীর্তনখোলার নতুন পানিতে নৌকা ভ্রমণে। আবার আদরের ছোট্ট সন্তানটিকে নিয়ে এসেছেন মন মাতানো দৃশ্য দেখাতে।
বরিশালের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র ত্রিশ গোডাউন এলাকায় দেখা যায় উৎসবপ্রেমীদের ঢল। অনেকদিন ব্যস্ত থাকার পর পরিবার পরিজনদের নিয়ে বেড়ানোর সুযোগ পেয়ে আনন্দের অনুভূতি জানালেন তারা।
কীর্তনখোলার পাড়ে অবকাশে বেড়াতে আসেন সৈয়দ জামাল হোসেন। জামালের সাত বছরের মেয়ে তাহমিদা ইয়াসমিন ইতি তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার অনেক ভালো লাগছে নদীর ধারে বেড়াতে এসে। আমি তিনটা বেলুন কিনেছি, পেয়ারা খেয়েছি, নৌকাতে চড়েছি।’
সৈয়দ জামাল বলেন, ‘কাজের চাপে পরিবার নিয়ে বাইরে বেড়ানোর সুযোগ হয় না। আজ বাসায় অতিথি এসেছিল তাদেরকে সময় দিয়ে পরিবার নিয়ে বেড়াতে বের হয়েছি।’
সেলফি প্রেমী বন্ধুদেরও কমতি নেই এখানে। গ্রুপ করে কিংবা পরিবার নিয়ে নানা ধরনের সেলফি তুলতে ব্যস্ত অনেকে। আর সেলফি মানেই ফেসবুক, আর তাই কীর্তনখোলা পাড়ের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে স্মার্টফোনের দখলেই চলছে আড্ডাবাজি।
এমনই এক সেলফিবাজ ফয়সাল তরঙ্গ বলেন, ক্যামেরাতে ছবি তুললে ক্যামেরাম্যান আসে না। আর আমি চাই না আমার গ্রুপের কেউ বাদ পড়ুক। তাই ইচ্ছামতো সেলফি তুলছি।
বরিশাল নগরীর শিশুপার্কে বিনোদন প্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়। পছন্দের রাইড আর মন মাতানো আকর্ষণ দেখতে বিকেল হতে না হতেই লাইন লেগে যাচ্ছে টিকিটের জন্যে। ওই শিশুপার্কে বেড়াতে আসা রাফসান হোসেন বলেন, গত ঈদে বরিশালে ছিলাম না। এবার আসতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।
তাই ছোট ভাই বোনদের নিয়ে পার্কে আসলাম আনন্দ ভাগাভাগি করতে।
এছাড়াও ঈদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিতে কেউ কেউ আবার বরিশালের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনাও করছেন। সব মিলিয়ে এই বিভাগীয় শহরের বিনোদন কেন্দ্রগুলোর পরিবেশে নতুন রঙ এনে দিয়েছে বিনোদন প্রেমীদের উচ্ছ্বাসে।”