মোঃ শাহাজাদা হিরা ॥
সিনিয়ার স্টাফ রির্পোটার.
মা আমি কি আর পায়ে হেঁটে মাদ্রাসায় যেতে পারব না? এমনি কাকুতি করে মায়ের সাথে কান্নায় ভেঙ্গে পরছে সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো মেধাবী ছাত্র জিহাদ (১৩)। গত ২৩ ফেব্র“য়ারী রোজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মাদ্রাসা ছুটির পরে মায়ের সাথে রূপাতলী থেকে মটর সাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হিরন পয়েন্টে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা বেপরোয়া বাস (ভোলা জ-১১-০০১১) কোনো সংকেত না দিয়ে ভোলার রাস্তায় ঢুকতে গেলে মটর সাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে জিহাদ ও তার মাসহ মটর সাইকেলের চালক মারাত্মক ভাবে জখম হয়। তাদের আরোহন করা মটর সাইকেলটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে এলাকাবাসিরা তাদের অচেতন অবস্থায় শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে তাৎখনিক ভাবে তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়। জিহাদ’র মা ও গাড়ী চালক আশঙ্কামুক্ত হলেও জিহাদের দেহ থেকে তার বাম পাটি বিচ্ছিন্ন করা হয়। বর্তমানে তারা শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জিহাদ ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার নান্দিকাঠি গ্রামের মৃত আরিফুর রহমানের ছেলে। সে বরিশাল রওযাতুল জান্নাত কামিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র। সে বরিশাল সদর উপজেলা থেকে ২০১৪ সনে পঞ্চম শ্রেণীর সমাপণী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অ+ ও বৃত্তি লাভ করে। জিহাদের মা নুসরাত জাহান মনিষার সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, জিহাদ আমার মেধাবী সন্তান সে সবসময় ভবিষ্যতে বড় হবার স্বপ্ন দেখতো আর বলতো মা আমি বড় হয়ে তোমার সব দুঃখ কষ্ট দূর করে দেবো। কিন্তু ঘাতক বাস আমার ছেলের জীবন শেষ করে দিয়েছে জিহাদ এখন স্বাভাবিক মানুষের মতন চলাফেরা করতে পারবেনা। আমি অর্থের অভাবে তার ভালো চিকিৎসাও করতে পারছিনা। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামান বলেন, ঘনটাটি খুবই দুঃখজনক। গাড়ীর বেপরোয়া চলাফেরার কারণে একটি মেধাবী ছাত্রের জন্য অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেলো। আমি জিহাদের সুস্থ্যতা কামনা করছি, পাশাপাশি যারা এই অপরাধের সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি। জিহাদের চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০,০০০ টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবে। এদিকে ঘাতক বাস ও বাস চালককে আটক করতে পারেনি আইন শৃংখলা বাহিনী। এমনকি বাস মালিক সমিতির পক্ষ্য থেকে কোন সহযোগিতা পায়নি জিহাদের পরিবার। এ বিষয়ে জিহাদের স্বজন, শিক্ষক ও সহপাঠিরা সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উপযুক্ত বিচারের দাবি জানায় এবং তার ভবিষ্যৎ মঙ্গল কামনা করে