রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজে এক ছাত্রীকে প্রকাশ্যে চড় মেরেছে এজাজ ওরফে রিক নামের এক সহপাঠী।
আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে কলেজের ভেতরেই এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে কলেজের সব ক্লাস স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। জরুরি সভা হয়েছে শিক্ষক পরিষদের।
মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর ভাষ্য, সকালে ‘ক’ শাখার শিক্ষার্থীদের অর্থনীতি বিষয়ের ক্লাস চলছিল। এ সময় বখাটে রিক ক্লাসে বসেই মুঠোফোনে কথা বলছিল। শিক্ষক বায়েজিদ বোস্তামি তখন ওই ছাত্রের কাছ থেকে মুঠোফোনটি কেড়ে নেন। এরপর তাকে ক্লাসের পেছনে গিয়ে বসতে বলেন।
ক্লাসের অন্য শিক্ষার্থীরা তখন ওই শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করেন, রিক প্রতিদিনই ক্লাসে বসে মুঠোফোনে কথা বলেন, ফেসবুক চালান এবং মেয়েদেরও উত্ত্যক্ত করেন। তাঁদের কথায় সায় মেলান ওই ছাত্রীও। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রিক।
ওই ছাত্রী জানান, সকাল পৌনে ১০টায় ক্লাস শেষ হয়। এরপর ক্লাসের শিক্ষক প্রথমে বেরিয়ে যান। পেছনে পেছনে শিক্ষার্থীরাও বের হচ্ছিল। বখাটে রিক তখন দাঁড়িয়ে ছিল শ্রেণিকক্ষের দরজার পাশে। ওই ছাত্রী সেখানে যাওয়া মাত্র তাকে সবার সামনেই জোরে একটি চড় মারেন রিক। গালিগালাজও করেন। এরপর রিক পালিয়ে যান।
সহপাঠীরা জানায়, রিক প্রায়ই ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করেন। রিক ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের কর্মী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। কলেজ কর্তৃপক্ষও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। তবে আজ রোববার ওই ছাত্রীকে চড় মারার পর তাঁর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ তখন সব শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়ে ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়।
রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক নিলুফার পারভীন বলেন, ‘মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে আমাদের কাছে আসে। আমরা সব শুনেছি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কলেজের সব ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে। উভয়পক্ষের অভিভাবককে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’
নিলুফার পারভীন জানান, রিকের বাড়ি নগরীর মেহেরচণ্ডী এলাকায়। রিকের এমন কাণ্ডে পর কলেজের শিক্ষক পরিষদের জরুরি সভা হয়েছে। শিক্ষকরা তাঁকে কলেজ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছেন। আর এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করার জন্য ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রিকের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ বলেন, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজে ওই নামে ছাত্রলীগের কোনো কর্মী নেই।