অনলাইন ডেস্ক :: মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কৃষি বিজ্ঞানী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসানকে ৩০ মে ২০১৯ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে আগামী ৪ (চার) বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন।
প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম ভাইস-চ্যান্সেলর। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের অন্তর্গত কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে প্রবীণ শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান ১৯৫৬ সনের ২৮ জানুয়ারি বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার নয়াবাড়ী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বিশিষ্ট সমাজসেবী মরহুম আবুল হাসান ও মাতা ফাতেমা বেগম।
শিক্ষা জীবনে কৃতিত্বের অধিকারী প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান ১৯৭৬ সনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ থেকে কৃতিত্বের সাথে বিএসসি ইন এগ্রিকালচার-অনার্স (প্রথম শ্রেণীতে চতুর্থ) এবং ১৯৭৭ সালে এমএসসি ইন জেনেটিক্স অ্যান্ড প্ল্যান্ট ব্রিডিং ডিগ্রি (প্রথম শ্রেণিতে প্রথম) লাভ করেন।
পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস থেকে ১৯৮৯ সনে কমনওয়েলথ স্কলার হিসাবে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে রয়েল সোসাইটি স্কলার হিসাবে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন এবং ১৯৯৬ সালে জাপান সোসাইটি ফর দি প্রোমোশান অব সাইন্স ফেলো হিসাবে তিনি জাপানের মিয়াজাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন।
১৯৯৯-২০০১ সালে আলেকজ্যান্ডার ভন হামবোল্ট ফাউন্ডেশন ফেলো হিসাবে জার্মানির গুটিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন। ২০০৬ সালে নরম্যান ই বোরলগ সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফেলো হিসাবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেন। ২০১৫ সালে রিসার্চ ম্যানেজমেন্টে বিশেষ অবদানের জন্য অস্ট্রেলিয়ার জন ডিলন মেমোরিয়াল ফেলো অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান ১৯৮১ সনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সনে সহকারী প্রফেসর, ১৯৯১ সনে সহযোগী প্রফেসর ও ১৯৯৫ সনে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। এ ছাড়াও তিনি ২০০২ সনে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগে খন্ডকালীন প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওর্য়াকশপ ও কনফারেন্সে যোগদান করে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। বিভিন্ন টেকনিক্যাল সেশনে চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গবেষণা ও শিক্ষা সংক্রান্ত কাজে পৃথিবীর বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন। তার কৃষিসংশ্লিষ্ট ৫টি বইসহ ১৬৬টি গবেষণামূলক প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি শতাধিক এমএস ও ২২জন পিএইচডি ছাত্র-ছাত্রীর গবেষণা সুপারভাইজার হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়াও তিনি ৩০টি দেশী-বিদেশী গবেষণা প্রকল্প সফলভাবে পরিচালনা করেছেন।
বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান, শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট, আহবায়ক প্রভোস্ট পরিষদ, পরিচালক বাউরেস, কো-অর্ডিনেটর উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটি ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কৃষি বিশেষজ্ঞ হিসেবে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন।
একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শিক্ষক সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতি, ক্রপ সায়েন্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সভাপতি, বাংলাদেশ জেএসপিএস অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি, সদস্য বাংলাদেশ সরকারের পে অ্যান্ড সার্ভিস কমিশন ২০১৪, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর বায়োটেকনলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সভাপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, শহীদ শামসুল হক হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি এবং কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতির সহ-সভাপতি এর দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করেছেন। তিনি বর্তমানে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পেশাগত, সামাজিক সংগঠনের কার্যক্রমের সাথে জড়িত রয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান বিবাহিত এবং চার সন্তানের জনক।