ঈদুল ফিতরের বাকি আর কয়েকদিন। কিন্তু ঈদের আগে শেষ হচ্ছে না ভোলার আঞ্চলিক মহাসড়ক ও উপজেলা সংযোগ সড়কের সংস্কার কাজ। বিশেষ করে ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর, ভোলা-বাংলাবাজার, দৌলতখান-তজুমুদ্দিন ও চরফ্যাশন-বেতুয়া-দক্ষিণ আইচা সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতেই হবে।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগে সংস্কার কাজ শেষ করা সম্ভব না হলেও কোরবানির ঈদের আগে কাজ শেষ করা হবে। তবে ঈদের আগে বিশেষ বরাদ্দে রাস্তার খানাখন্দ ভরাট করে যান চলাচলের উপযোগী করা হবে।
ভোলা থেকে সড়ক পথে বরিশাল-ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পরানগঞ্জ দক্ষিণ আইচা আঞ্চলিক মহাসড়ক। গত বছরের জানুয়ারি মাসে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির পুনঃনির্মাণ এবং বাঁক সরলীকরণের কাজ শুরু হয়েছিল। বেশিরভাগ এলাকার কাজ শেষ হলেও এই রুটের ইলিশা বাসস্ট্যান্ড, পাইলট, বুড়ির মসজিদ ও পরাণগঞ্জের কয়েকটি পয়েন্টে দুই কিলোমিটার রাস্তা এবং ভোলা-বাংলাবাজার রুটের ঘুইংগারহাটসহ আরও তিন কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হয়নি।
এছাড়া বাংলাবাজার-দৌলতখান সড়কের ১৫ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা বিরাজ করছে। ওই সড়কে এখনও সংস্কার কাজই শুরু হয়নি। কুঞ্জেরহাট থেকে তজুমুদ্দিন এবং চরফ্যাশন থেকে বেতুয়া ও দক্ষিণ আইচা থানা পর্যন্ত প্রায় ১৫০ কিলোমিটার রাস্তার অধিকাংশই পুরনো ও খানাখন্দে ভরা। তবে অনেক রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত গাড়ি এবং পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করায় যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
ভোলার পরাণগঞ্জ থেকে ঘুইংগারহাট বাংলা বাজার হয়ে দৌলতখান সড়কে যাতায়াতকারীরা ঈদের আগেই রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। ওই সড়কের অটো চালক সুমন বলেন, ‘দুই বছর ধইরা রাস্তা ভাঙা, গাড়ি চালাইতে পারিনা। গাড়ি ভাইঙা রাস্তায় পড়ে থাকে। এইডা কবে ঠিক অইবো কে জানে। ঈদে গাড়ি চালামু, কিন্তু এই ভাঙা রাস্তায় কেমনে চালামু?’
মোটরসাইকেল আরোহী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ মিনিটের পথ পার হতে লাগে প্রায় আধা ঘণ্টা। প্রতিটা রাস্তা ভাঙা, খানাখন্দে ভরা। জনভোগান্তির তো আর কোনো শেষ নেই। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমাদের ভোগান্তি থেকেই গেল।’
ঘুইংগার হাটের শাজাহান মাস্টার বলেন, ‘আমরা বোরাক দিয়া আসা যাওয়া করি। রাস্তা খারাপ থাকায় প্রাণ যাওয়ার ভয় থাকে। রাস্তায় পানি জমে থাকে। অনেকে পড়ে যান।’
মাইক্রোবাস চালক খালেক বলেন, ‘বাংলাবাজার থেকে দৌলতখান এর রাস্তা অনেক খারাপ। ফলে গাড়ি সাইড দিতে অনেক কষ্ট হয়। আমরা রাস্তার নিচে নাইম্যা গেলে বর্ষাকালে চাকা স্লিপ কাটে, গাড়ির অনেক সমস্যা হয়। অটোগুলোও সাইড দিতে গিয়া উল্টে যায়।’
সড়ক ও জনপদ বিভাগ, ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী পংকজ ভৌমিক বলেন, ‘অক্টোবর পর্যন্ত সময় থাকায় ঈদের আগে রাস্তার সংস্কারের কাজ শেষ হচ্ছে না। তবে ঈদের আগে রাস্তার খানাখন্দ ভরাট করে চলাচলের জন্য উপযোগী করে দেয়া হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ভোলায় মোট ২৭১ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে লাহারহাট ফেরিঘাট থেকে ইলিশা ফেরিঘাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক ও পরানগঞ্জ থেকে দক্ষিণ আইচা পর্যন্ত ১১১ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক আছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় ১৪৩ কিলোমিটার জেলা সড়ক রয়েছে।