গাঁজা, রেকটি ফাইড স্পিরিট ও ফেন্সিডিলের পর বানারীপাড়ার নেশার রাজ্যে ব্যপকভাবে সংযোজিত হয়েছে মরণ নেশা “ইয়াবা”। মাদকসেবীরা দিন দিন ইয়াবার উপর ঝুঁকে পড়ছে। প্রতিদিনই ইয়াবার নেশা আসক্তদের মিছিলে যোগ দিচ্ছে নতুন নতুন সদস্য। ইয়াবার ডাক নাম “বাবা”। নেশার জগতে ইয়াবা বাবার চেয়েও প্রিয়। অভিজাত নেশাগ্রস্থদের কাছে এটি “আইস পিল” নামেও পরিচিত।
বানারীপাড়ায় সাধারণত ইয়াবা বিক্রি হয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরগুলোতে কল করলেই ইয়াবা পৌঁছে যায় মাদকসেবীদের হাতে। প্রতিটি ইয়াবা ট্যাবলেট খুচরা বাজারে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। পূর্ন নেশাগ্রস্থ হতে প্রতিদিন একজন নেশাগস্থের ২ থেকে ৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দরকার। মিয়নমার সীমান্ত দিয়ে আসা নিষিদ্ধ এ ইয়াবা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বরিশাল হয়ে পৌঁছে যায় বানারীপাড়ার ব্যবসায়ীদের কাছে।
অনভিজ্ঞদের ধারণা ইয়াবা পানি দিয়ে ট্যাবলেটের মত সেবন করা হয়। আসলে ইয়াবা গুড়া করে অনেকটা হেরোইনের মত ব্যবহার করা হয়। ইয়াবা যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি করায় অনেকে সেজন্য ব্যবহার করতে গিয়ে নিজের অজান্তে নেশার জগতে হারিয়ে যাচ্ছে। বানারীপাড়ায় দিন দিন যেভাবে মরণ নেশা ইয়াবা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে তাতে এখনি এর বিরুদ্ধে কার্যকর আইনী ব্যবস্থা গ্রহন না করা হলে সামনে আরও ভয়াবহ পরিস্থির সৃষ্টি হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে মাদকের ভয়াল ছোবলে বানারীপাড়ায় বেশ কয়েকজন মাদকসেবী অকালে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। আবার অনেকে মানসিক ভারসাম্য ও দৃষ্টি শক্তি হারানো সহ ভূগছেন নানা জটিল রোগে। গাঁজা,রেকটি ফাইড স্পিরিট(আরএস) ও ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী ও সেবীদের তৎপরতাও রয়েছে ব্যপকহারে।
প্রকাশ্যে মাদকের ছড়াছড়িতে উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। মাদকসেবীদের পরিবারে বিরাজ করছে চরম অশান্তি। মাদক ক্রয়ের টাকা সংগ্রহে মাদকসেবীরা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। পৌর শহর সহ গোটা উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ বলেন- প্রায়ই মাদকসেবীদের আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজা দেয়া হচ্ছে। উপজেলা মাদক বিরোধী জোট ও প্রেসক্লাবের সভাপতি রাহাদ সুমন মাদকসেবীদের সমাজ ও পরিবারের বোঝা আখ্যা দিয়ে বলেন মাদক বন্ধে দরকার সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতার।
থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. খলিলুর রহমান মাদকের বিরুদ্ধে তার অবস্থান জিরো টলারেন্সে জানিয়ে বলেন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।