চলতি বছরের জুলাই থেকে পাঁচ বছরের পরিবর্তে ১০ বছর মেয়াদি ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) দেয়া হবে হবে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার (১৫ মে) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চতুর্থ বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকেই ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে। এতে মানুষের ভোগান্তি কমবে।
তিনি আরও জানান, বৈঠকে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোকে পাসপোর্ট ইস্যু ও নবায়ন কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার সুপারিশ করে কমিটি।
বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর করার উদ্যোগ নিলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সুবিধাসহ নানা কারণে বিভিন্ন মহল থেকে পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর করার প্রস্তাব করা হয়। বিষয়টি নিয়ে এ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি একাধিকবার বৈঠকেও বসে।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, বৈঠকে ২০২০ সালে ‘মুজিব বর্ষ’ পালনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। ‘মুজিব বর্ষ’ পালনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত আন্তর্জাতিক যোগাযোগ কমিটির সিদ্ধান্তগুলো স্থায়ী কমিটিকে অবহিত করার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া গৃহীত কর্মসূচি চূড়ান্ত করে সুষ্ঠুভাবে শেষ করার জন্য সাব-কমিটি গঠন এবং সম্ভাব্য বাজেট প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া ‘মুজিব বর্ষ’ পালনকালে সব মিশনের সামনে দৃষ্টিনন্দন ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে বছরব্যাপী অনুষ্ঠান পালনের আবহ তৈরির সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে তিউনেশিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে অবৈধভাবে বিদেশ গমনের সময় নিহত বাংলাদেশিদের জন্য শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়। যেসব দালাল চক্র অবৈধ মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মিশনসমূহকে আহত ও নিহতদের পরিবারকে সহযোগিতার সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে বিদেশি মিশনগুলোকে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা, ডাটাবেজ তৈরির মাধ্যমে প্রবাসীদের সম্পৃক্ত করে সেবার মানোন্নয়ন এবং মিশনে কর্মরতদের মাধ্যমে যাতে প্রবাসীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখার সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে বিদেশে বাংলাদেশি মিশন ও মন্ত্রণালয় সম্পর্কে গণমাধ্যমে কোনো বিরূপ সংবাদ প্রকাশিত হলে তাৎক্ষণিক সন্তোষজনক জবাব প্রস্তুত করে পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, মো. আব্দুল মজিদ খান, নাহিম রাজ্জাক এবং নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশ নেন।
এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মাহবুবুজ্জামান, মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব খোরশেদ আলমসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।