নানা কারনে দক্ষিণাঞ্চলে কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমান। বিগত দশ বছরের ব্যবধানে এ অঞ্চলে কমে গেছে প্রায় ১ দশমিক ৯৮ একর জমি। বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে কমে যাওয়ার হার পূর্বের পাঁচ বছরের তুলনায় বেশি। ২০১৪ সাল থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত জমির পরিমান কমেছে শুণ্য দশমিক ৯৯ একর। সংখ্যায় যার পরিমান দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ২২৬ একর।
ফসলি জমির পরিমান কমলেও কমেনি উৎপাদন। বরং বিগত ১০ বছরে দক্ষিণাঞ্চলে ধান, ডাল, সবজি, ভুট্টাসহ বিভিন্ন মসলা জাতীয় পণ্যের উৎপাদন বেড়েছে বহুগুন। ফসল ফলাতে উপশী ও হাইব্রিডসহ উচ্চ ফলনশিলজাত ব্যবহারের কারনেই কম জমিতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় উদ্যান বিশেষজ্ঞ জিএমএম কবির খান।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিবছর গড়ে দশমিক দুই শতাংশ ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। সে হিসেবে গত ১০ বছরে এক দশমিক ৯৮ ভাগ ফসলি জমি কমেছে। তবে তুলনামূলক জমির পরিমান কমেছে বিগত পাঁচ বছরে। কমে যাওয়া ফসলি জমির পরিমান অন্যান্য জেলার তুলনায় ভোলা ও পটুয়াখালী জেলায় বেশি। বিগত পাঁচ বছরে এ দুটি জেলায় জমির পরিমান কমেছে এক হাজার ৫০০ একর।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উদ্যান বিশেষজ্ঞ জিএমএম কবির খান বলেন, জমি কমলেও প্রযুক্তির ব্যবহারের কারনে উৎপাদন বেড়েছে। তবে জমির পরিমান কমে যাওয়ায় আমাদের উপশী বা হাইব্রিডসহ উচ্চফলনশীলতাজ বীজের প্রতি নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। যার কারনে বৈরী আবহাওয়া এবং জলোচ্ছাস বা অতিবর্ষণের কারনে কৃষকদের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাওফিকুল আলম বলেন, জমির পরিমান কমে যাওয়ার কারন হিসেবে চলমান উন্নয়ন, ইমরাত, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও যত্রতত্রভাবে মালিকানাধীন স্থাপনা নির্মানকেই চিহ্নিত করা যায়। পাশাপাশি ইটভাটাকেও দায়ী করা যেতে পারে।
কারণ ইটভাটার কালো ধোয়ার কারনে জসলি জমির উর্বরতা কমে যায়। যে কারনে ওই জমি ফসল উৎপাদনের জন্য কাজে আসেনা। তিনি আরও বলেন, বিগত পাঁচ বছরের হিসেবে ভোলা ও পটুয়াখালী অঞ্চলে জমির পরিমান বেশি কমেছে। এরমধ্যে পটুয়াখালী জেলায় পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, লেবুখালীতে সেনানিবাস নির্মানে অনেক জমির প্রয়োজন হয়েছে। যেগুলো সবই ফসলি জমি ছিলো। সমুদ্র বন্দর ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ঘিরে কলাপাড়া, কুয়াকাটা ও বরগুনার আমতলীর ফসলি জমিতে বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে উঠছে। ফলে ওই অঞ্চলে জমির পরিমান বেশি কমেছে।