ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে পা হারানো ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সাবরিনা আক্তার সেফা এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে। সে জিপিএ-৪.৩৩ পেয়েছে। সাবরিনা ভবিষ্যতে কলেজের শিক্ষক হতে চায়।
সাবরিনা নলছিটির বড়ৈকরণ গ্রামের কৃষক আবদুল কাদেরের মেয়ে। বাড়ি থেকে সাবরিনার বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় চার কিলোমিটার। এর কিছুটা পথ সুগন্ধা নদীতে ট্রলারে পার হতে হয়। ২০১৫ সালে বর্ষাকালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে ট্রলারঘাটে পিছলে পড়ে সে পায়ে ব্যথা পায়। কিছুদিন পর পায়ের ব্যথা তীব্রতর হতে থাকে। পরের বছর তাঁর পায়ে ক্যানসার ধরা পড়ে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তার অস্ত্রোপচার হয়। তার ঊরু থেকে বাঁ পা কেটে ফেলা হয়। তখন সে দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এরপর ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হয়েছে সাবরিনার। প্রতি মাসে কেমোথেরাপি দিতে হতো। বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের টিফিনের টাকা, সমাজের বিত্তবানদের সাহায্য ও বাবার জমি বিক্রির টাকায় তাঁর চিকিৎসা চলে। খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এখনো সাবরিনা প্রায়ই অসুস্থ থাকে। এ জন্য ২০১৮ সালে সে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। তবে সে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে।
গতকাল এসএসসির ফল প্রকাশের পর সাবরিনা আক্তার জানায়, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সহপাঠী ও বাবা-মা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন। বড় হয়ে আমি কলেজের শিক্ষকতা করতে চাই।’
সাবরিনার বাবা আবদুল কাদের জানান, মেয়ের চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে তাঁকে হিমশিম খেতে হয়েছে। মেয়ের ভালো ফলে তিনি দারুণ খুশি।
ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক তৌহিদ হোসেন খান বলেন, মেয়েটি মনোবল না হারিয়ে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে ভালো ফল করেছে। তাকে নিয়ে বিদ্যালয়ের সবাই গর্বিত।