বরিশাল জেলায় ঘুর্নিঝড় ফণি’র আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির সরেজমিনে পরিদর্শন করতে আজ সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসক বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার বরিশাল, মোঃ শহিদুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরিশাল সিটি করর্পোরেশন বরিশাল, খাইরুল ইসলামসহ আরো অনেকে।বরিশাল সিটি করপোশনের ১১ নং ওয়ার্ডের অর্ন্তগত বঙ্গবন্ধু কলোনী সংলগ্ন কীর্তণখোলা নদীর ভাঙ্গন রোধকল্পে নির্মিত বাধের সামান্য ভাঙ্গন সৃষ্টি হলে জেলা প্রশাসক বরিশাল এর উপস্থিতিতে তাৎক্ষনিকভাবে মেরামত করা হয়।
বিভাগীয় কমিশনার বরিশাল রাম চন্দ্র দাস বরিশাল নদী বন্দরে পরিদর্শনে গেলে তার সাথে সেখানে উপস্থিত হয়ে বরিশাল জেলার ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয় ক্ষতি তুলে ধরেন। পরে দুপুর ১২ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা শেষে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে ক্ষয় ক্ষতির ধরনসহ ক্ষতির পরিমান তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক বরিশাল। ৩৩১ টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহনকারীর সংখ্যা ৫০,৫৬৫ জন তার মধ্যে নারী ও শিশু ৩১৬২১ জন পুরুষ ১৮৯৪৪ জন ছিলো আজ সকালে আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে ১০০০০ থেকে ১২০০০ লোকের অবস্থান রয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা ও শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে এবং আশ্রয় গ্রহনকারী লোকদেরকে পরিস্থিতির উন্নতি না হুওয়া পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার জন্য পরামর্শ প্রদানের কাজ অব্যাহত রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে আশ্রয়গ্রহণকারী মানুষের অবস্থান আনন্দমুখর করার জন্য খিচুড়ি রান্না এবং বিভিন্ন খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। গবাদি প্রাণীর ক্ষতি এখন পর্যন্ত কোন ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলমান রয়েছে।
বরিশাল জেলায় ফসলের ক্ষতি কিছুটা হয়েছে যেমন, বোরো ধান ৩৬৮০ হেক্টর ,মুগডাল ১৫১০ হেক্টর, মরিচ ১৪৬৬ হেক্টর ,তিল ২৫০ হেক্টর, শাক-সবজি ৯৪০ হেক্টর ,ভুট্টা ১২০ হেক্টর ,পান ৫৩৫ হেক্টর, সয়াবিন ৫৫২ হেক্টর। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলমান রয়েছে। ১০১৫ টি ঘরবাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। বাধের ক্ষতি সাতলা-বাগধা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের শিবপুর পয়েন্টে ২০মিটার পরিমাণ সামান্য ক্ষতি হওয়ার সাথে সাথে মেরামত করা হয়। বিভিন্ন বেড়ীবাধ সার্বক্ষনিক নজরদারীর মধ্যে রাখা হয়েছে।
৬০৬৫ টি ছোট বড় গাছের আংশিক ও সর্ম্পুণ ক্ষতি হয়েছে। এ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চুড়ান্তভাবে নির্ধারণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মালিকানাধীন ২৫টি পুকুরের মাছ আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চুড়ান্তভাবে নির্ধারণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রাস্তাঘাটের ক্ষতি ৬৫ কি.মি. কাঁচা রাস্তা আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চুড়ান্তভাবে নির্ধারণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মানুষের ক্ষতি এখন পর্যন্ত কোন ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য যে,জরুরি ভিত্তিতে ঘূর্ণিঝড় ফণি’র আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহের কাজ অব্যাহত রয়েছে। হালনাগাদ তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে সকলের মাঝে তুলে ধরা হবে।