ঘূর্ণিঝড়ের ফনীর প্রভাবে বরিশাল অঞ্চলে দুপুরের পর থেকে ঝড়–বৃষ্টি শুরু হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ঢালচর ইউনিয়নের প্রায় ১৭ হাজার বাসিন্দা সেখানে আটকা পড়েছে। এ ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় অনেকেই বনের আশ্রয় নেয়।
চারদিকে নদী আর সাগরবেষ্টিত বিচ্ছিন্ন এই জনপদ ঢালচর মূল ভূখণ্ড থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। এখানে কোনো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নেই। তিনটি পাকা ভবন রয়েছে। সেগুলোতে ধারণক্ষমতা ৬০০ লোকের। যেকোনো ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে সুরক্ষার জন্য এ ইউনিয়নের বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে অপেক্ষাকৃত উঁচু শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চলে আশ্রয় নেয়। দ্বীপটির বেশির ভাগ বাসিন্দা জেলে।
ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে কোনো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নেই। চারদিক নদী-সাগরবেষ্টিত ইউনিয়নের ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় অনেকে বনের মধ্যে আশ্রয় নেয়।’
ঢালচর ইউনিয়নের বাসিন্দা বাবুল হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার সকালে অধিক উচ্চতার জোয়ারে দ্বীপটির বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়। সাগরে পানি বাড়ছে। ভয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঘুমাতে পারিনি।’ জেলে রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঝড় শুরু হলে আমরা জঙ্গলের আশপাশে আশ্রয় নিই। কারণ এটা সমতলের চেয়ে অনেকটা উঁচু এবং ইউনিয়নটির তিন পাশ বনাঞ্চলে ঘেরা। আমরা জানি, এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ কিন্তু আমাদের কোনো বিকল্প নেই। পুরো ইউনিয়নে তিনটি পাকা ভবন আছে, যেখানে সর্বোচ্চ ৬০০ থেকে ৭০০ মানুষ আশ্রয় নিতে পারে। আমরা সব সময় ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছি।’
ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিকী বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ঢালচর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় অবস্থা খারাপ ছিল। এখন ভাটা হওয়ায় পানি নেমে গেছে, তাই তেমন সমস্যা নেই। তবে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য কোস্টগার্ডের দুটি যান পাঠানো হয়েছে। আর যে তিনটি পাকা ভবন আছে, সেখানে ৭০০ থেকে ৮০০ লোক আশ্রয় নিয়েছে।