বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য প্রফেসর ড. এস.এম ইমামুল হকের অপসারণ চেয়ে শুরু হওয়া আমরণ অনশন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ববি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬ জন।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা পর্যন্ত অনশনে ১২ শিক্ষার্থী ও চার শিক্ষকসহ ১৬ জন অসুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতা লোকমান হোসেন।
তিনি জানান, ১২ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানির ৬ষ্ঠ ব্যাচের আনোয়ার, অর্থনীতির ৬ষ্ঠ ব্যাচের রাশেদ, লোক প্রশাসনের ৬ষ্ঠ ব্যাচের মারুফ ও সোহাগসহ চারজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের মধ্যে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ক্যাম্পে আর কেউ কর্মসূচিস্থলে (বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচে) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অনশনের দ্বিতীয়দিন শেষে শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি কায়ছার আহম্মেদ জয়, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারসহ মোট চার শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তাদের মধ্যে শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপককে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা ববির মেডিকেল সেন্টারে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন ভিসির অপসারণ মর্মে কোনো সংবাদ না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে তারা পিছু হটবেন না।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া জানান, শিক্ষক সমিতির আহ্বানে সারা দিয়ে বুধবার (২৪ এপ্রিল) থেকে এ পর্যন্ত ৫৬ জন শিক্ষক তাদের স্ব-স্ব প্রশাসনিক পদ (প্রভোস্ট, প্রক্টর, চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদ) থেকে পদত্যাগের বিষয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। যারা এরইমধ্যে তাদের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এদিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌথ আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নেতাদের সংহতি প্রকাশ করার কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন ববি শিক্ষার্থীরা।
ববি শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার ডাকসুর সভাপতি-সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে আমাদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন নেতারা। পাশাপাশি তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের (ববি শিক্ষার্থীদের) সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে ভিসির পদত্যাগের দাবিকে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে তারা। পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিসহ শিক্ষকদের একাংশ ও কর্মচারীরা একাত্মতা প্রকাশ করেন। ধারাবাহিকতায় ২৪ এপ্রিল থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ভিসির অপসারণ দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।