অনলাইন ডেস্ক : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশের কোথাও শান্তি নেই, আজ রাস্তায় নামলে গুম হতে হয় এবং ঘরে থাকলে খুন হতে হয়। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও দেশের কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পায়নি।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কলেমা চত্বরে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ভাণ্ডারিয়া সাংগঠনিক জেলা শাখা আয়োজিত কৃষক-শ্রমিক ছাত্র জনতা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, খুনীদের বিরুদ্ধে মামলা করে যে দেশে বাদীকে বিচারের জন্য ধর্ণা দিতে হয় আর খুনী আসামীরা যখন ধরাছোয়ার বাইরে থেকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় তখন বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ভাণ্ডারিয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবিরের সভাপতিত্বে ও মাওঃ ইকবাল শিকদারের পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, ইসলামী শ্রমিক অন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরের সভাপতি প্রভাষক মাওঃ জাকারিয়া হামিদী, ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা মাও: আব্দুর রাজ্জাক জেহাদী, ইসলামী কৃষক-মজুর আন্দোলনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের অঙ্গীকার-এর সম্পাদক মোঃ মাকছুদুর রহমান, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ ইব্রাহিম হোসেন মৃধা, পিরোজপুর জেলা ইসলামী আন্দোলনের সেক্রেটারী মাওঃ এবিএম শেহাব উদ্দীন শেহাব, ভাণ্ডারিয়া উপজেলার নেতা মাওঃ মোঃ সোলায়মান মিয়া, ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সভাপতি আলহাজ্ব বাদশা জোমাদ্দার, শ্রমিক আন্দোলন নেতা মাওঃ বেলায়েত হোসেন ও মোঃ মোখলেছুর রহমান প্রমূখ।
চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম আরো বলেন, অপরাধীদেরকে ধরা ছোয়ার বাইরে রেখে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে বিচার প্রার্থীদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করা এখন কালচারে পরিণত হয়েছে। এ কারণে দেশে হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোসহ বিভিন্ন রকম অপরাধের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে।
সমাবেশে মাওঃ বেলায়েত হোসেনকে সভাপতি, মাওঃ মোঃ ইকবাল শিকদারকে সাধারণ সম্পাদক করে ভাণ্ডারিয়া সাংগঠনিক জেলা ও মাওঃ ছিদ্দিকুর রহমানকে সভাপতি, মাওঃ জাকির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কমিটি ঘোষণা করেন মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম। পরে তিনি ভাণ্ডারিয়া সরকারি কলেজ ময়দানে বিশাল ওয়াজ মাহফিলে তিনি অংশগ্রহণ করেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ২৯৮ জন প্রার্থী নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে গতকাল স্মারকলিপি দিয়েছে। স্মারকলিপি প্রদানেরর সময় পুলিশের বাধা দেয়ার প্রতিবাদে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের আমির চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের ধোঁকাবাজি, প্রহসন ও ভোট জালিয়াতির নির্বাচনের নজির নেই। সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে প্রতারণা ও ধোঁকাবাজির নির্বাচনের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে এ কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও পুলিশের বাধায় বিএমএ ভবনের সামনে প্রার্থীরা জমায়েত হন। সেখান থেকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন।
প্রেসিডেন্টের পক্ষে প্রেস সচিব জয়নুল আবেদীন স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। প্রতিনিধিদলে ছিলেন মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল হক আজাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আবদুল কাদের ও শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আলহাজ আব্দুর রহমান।
চরমোনাই পীর জালিয়াতির নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করে বলেন, এ নির্বাচনে দেশের মানুষ পরিবর্তনের জন্য ভোট দিতে না পারায় আফসোস করছে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও মানুষ ভোট ও মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। এরূপ ভোটের কারণেই পারুল বেগমরা নির্যাতিত ও ধর্ষিত। এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের নামে আরেক প্রহসনের চক্রান্ত চলছে। জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে সরকারের আখের রক্ষা হবে না।
তথ্য সূত্র :-নয়া দিগন্ত