বরগুনায় জেলে তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জেলেদের অভিযোগ, তাদের নাম না রেখে অন্য শ্রেণি-পেশার লোকজনদের জেলে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাই জেলেদের জন্য আসা বিভিন্ন সময়ের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত জেলেরা।
ট্রলার মালিক সমিতির দেয়া তথ্য মতে, সাগর উপকূলীয় জেলা বরগুনায় জেলে সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। তবে সরকারি নিবন্ধিত জেলে ৪৫ হাজার ৬২১ জন। জাটকা ইলিশ সংরক্ষণের চলতি আট মাসের অবরোধে ১৩ হাজার ৭৫০ জন জেলের জন্য সহায়তা এসেছে।
জেলেদের অভিযোগ, এই তালিকায়ও রয়েছে ব্যাপক গরমিল। তালিকায় নিবন্ধিত করা হয়েছে খুব কম সংখ্যক জেলে। তালিকার বেশিরভাগ নামই অন্য শ্রেণি-পেশার মানুষের। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা তাদের নিজেদের পছন্দ মতো করেছে জেলে তালিকা।
বরগুনা সদর উপজেলার ৭নং ঢলুয়া ইউনিয়নের জেলে সোবাহান, নাসির, কবির, খোকন, জুয়েলসহ একাধিক জেলে জানান, ইউপি সদস্যরা তাদের নাম তালিকায় রাখেনি। তাই জেলেদের জন্য আসা কোনো ধরনের সহায়তা পাচ্ছে না তারা। এ বিষয়ে ৭নং ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল টিটুর কাছে বার বার বললেও সহায়তা পায়নি তারা।
পাথরঘাটার জেলেরা জানায়, ৩০-৪০ বছর ধরে মাছ ধরছে তারা। অথচ তারা সহায়তা পায় না। সহায়তা পায় মেম্বারদের স্বজনরা। সহায়তা পায় মুদি দোকানদার, ব্যাংক কর্মকর্তা, রিকশা চালকসহ অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষ।
তালতলীর বেশ কয়েকজন জেলে জানান, তাদের জন্য আসা সহায়তা আনতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে ইউপি চেয়ারম্যানরা তা দেয় না। বিষয়টি মৎস্য অফিসে জানালেও কোনো লাভ হয়নি।
তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামীম রেজা জানান, ২০১২ সালে জেলে তালিকা তৈরি করেছে নৌবাহিনী। দ্বিতীয়বার এ তালিকা তৈরি করেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তাই গরমিল হয়েছে তালিকায়। এখানে মৎস্য অফিসের কোনো ভুল নেই। সরকার যাদের দায়িত্ব দিয়েছে তারাই ভুল করেছে। দায়ভার তারাই নেবে।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, সরদার মহীউদ্দিন জানান, এখন তালিকা হালনাগাদ না করা পর্যন্ত এ সমস্যার সমাধান হবে না।
তবে তালিকা হালনাগাদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে করা হবে বলে জানিয়েছেন বরগুনার জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ।
তিনি জানান, তালিকায় স্বচ্ছতার জন্য জেলে প্রতিনিধি সঙ্গে রেখে নতুন করে তা তৈরি করা হবে।