বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় বিএম কলেজছাত্রীসহ ৭ জন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছেন বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় বিএম (ব্রজমোহন) কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি নথুল্লাবাদ হোসাইনিয়া মাদ্রাসায় পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। প্রথমে সেখানে সড়ক অবরোধ করেন তারা। এরপর পুলিশের বাধা অতিক্রম করে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সামনে সেখানে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে সেখানে তারা বিভিন্ন যানবাহনের কাগজপত্র চেক করে এবং ঘাতক চালকের দৃষ্টান্তমুলক বিচার দাবিতে স্লোগান দেয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে এবং বিএম কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শিলা হালদারসহ সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছেন।
এদিকে পুলিশ জানায় শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে সড়ক অবরোধ সরিয়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
তিনি শিক্ষার্থীদেরকে দুর্ঘটনার ঘটনায় সুষ্ঠ বিচারের আশ্বাস দেন। পাশাপাশি যে দাবি দাওয়া রয়েছে তা নিয়ে সোমবার শিক্ষার্থী ও বাস মালিক-শ্রমিক নিয়ে বৈঠকে বসবে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে মেয়র বলেন, আমিও চাই দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। তবে সহিষ্ণু আন্দোলনের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে সাদিক আব্দুল্লাহর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধ তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যায় এবং দুপুর সোয়া ১২টায় বন্ধ থাকা বাস চলাচলও স্বাভাবিক করেছে শ্রমিকরা।
অপরদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর আশ্বসে তিনদিনের জন্য নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বেলা সোয়া ১২টায় বাস শ্রমিক নেতা জাহাঙ্গির হোসেন জানান, চালককে থানায় আটকে নির্যাতন না করে আদালতে দ্রুত পাঠানোর দাবি জানিয়ে শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। যা দ্রুত কার্যকরের আশ্বাসে শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। ফলে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল করছে।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল জানান, শ্রমিকদের সমস্যা আগেই সমাধান করা হয়েছিলো। পরে সিটি মেয়র ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তারা ক্যাম্পাসে ফিরে গেছেন। এখন বাস টার্মিনালের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) হাবিবুর রহমান, সহকারী পুলিশ কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন, এয়ারপোর্ট থানা ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিপুল পরিমান পুলিশ সদস্য।