অনলাইন ডেস্ক: বরিশাল নগরীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করতে নগরীর মধ্যদিয়ে একসময়ে প্রবাহিত খালগুলো পুনরূদ্ধার করে পুর্নখননের প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশেষ বরাদ্দ চেয়েছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বরিশাল নগরীর পানি নিস্কাশনের জন্য ৩০ বছর আগেও বহু সংখ্যক ছোট-বড় খাল প্রবাহিত ছিলো। এসব খাল দিয়ে একসময়ে ছোট-বড় নৌকা চলাচল করতো কিন্তু সাবেক পৌরসভা ও পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের আমলে অনেকগুলো খালকে পাকা ড্রেন বানিয়ে বর্ষাকালে নগরীতে জলাবদ্ধাতার সৃষ্টি করা হয়েছে। নির্মিত ড্র্রেনগুলো পরিস্কার করারও কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তাই এখন ড্রেনের উপরের স্লাব কেটে ভেতরে জমা মাটি ও আবর্জনার স্তুপ পরিস্কার করা হচ্ছে। আবার ড্রেনগুলো নির্মাণের সময়ে তাতে কোন ঢাল না রাখায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি কোন কোন ড্রেনের পানি নামার জন্য অন্যকোন ড্রেনের সংযোগের ব্যবস্থাও রাখা হয়নি। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই বরিশাল নগরী পানিতে ডুবে যায়।
পুরো নগরীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ৪৬টি খাল ও ৩০টি পুকুর সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ১৪শ’ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পগুলোর মধ্যে খালগুলো দখলমুক্ত করা, পুর্নখনন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এমনকি সরকারী পুকুরগুলোও পুনরূদ্ধারের প্রস্তাব করা হয়েছে। সাড়ে তিন বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৬টি খাল পুর্নখননের জন্য ১২১ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। ১০৯ কিলোমিটার খালগুলোর দুই পারের ২৩ কিলোমিটারের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে। এজন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ৪৮০ কোটি টাকা। এছাড়া খাল ও পুকুরের ঘাটলা ও বসার বেঞ্চ নির্মাণ, ১৭টি আরসিসি পুল নির্মাণ ও ৩০টি পুকুর সংস্কারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮৭ কোটি টাকা।
এসব খালের মধ্যে রয়েছে জেল খাল, সাগরদি খাল, লাকুটিয়া খাল, আমানতগঞ্জ খাল, নাপিতখালি খাল, ভাটার খাল, ভাড়ানি খাল, চাঁদমারি খাল, ভেদুরিয়া খাল, কলাডেমা খাল, নবগ্রাম খাল, সাপানিয়া খাল, হরিণাফুলিয়া খাল, পুডিয়া খাল, জাগুয়া খাল, কাশিপুর খাল, টিয়াখালি খাল, ঝোড়াখালি খাল, সোলনা খালসহ অন্য ছোট ছোট খালগুলো।
সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা মনে করছেন, এসব খালগুলো পুনরূদ্ধার করা হলে বরিশাল নগরী পরিবেশ বান্ধব নগরীতে পরিণত হবে। সড়কের পাশাপাশি নৌ-পথেও নগরীতে আসা যাওয়া করা যাবে।
-এফএনএস