চট্টগ্রাম বিমানন্দরে জিম্মি সঙ্কটের অবসান ঘটেছে। যে অস্ত্রধারী উড়োজাহাজটি জিম্মি করেছিলেন তাকে কম্বিং অপারেশনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করা হয়। পরে তিনি মারা যান।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান বলেছেন, সেনাবাহিনী, র্যাব, সোয়াট সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর কম্বিং অপারেশনে মাত্র আট মিনিটেই কথিত বিমান ছিনতাইকারী আটকসহ সফল অপারেশন শেষ হয়। রাত ৭টা ১৭ মিনিটে অপারেশন শুরু হয়ে ৭টা ২৫ মিনিটে শেষ হয়।’
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় এ অপারেশন পরিচালিত হয়। কথিত বিমান ছিনতাইকারী অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করেছে কি-না প্রবেশ করে থাকলে কীভাবে করল, কী উদ্দেশ্যে প্রবেশ করল তা জানাসহ সার্বিক বিষয়াদি সম্পর্কে নিশ্চিত করতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠিত হবে। তদন্ত কমিটির সদস্য সংখ্যা তিন থেকে চারজন হতে পারে বলেও জানান তিনি।
বিকেল পৌনে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে কাটায় গোটা দেশবাসী। এরই মধ্যে রাত ৭টা ১৭ মিনিটে অপারেশনে নামে কমান্ডো বাহিনী। ৭টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত চলা ওই অভিযানে নিহত হন উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী।
পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় কমান্ডো অপারেশন পরিচালিত হয়। অভিযানে সবাইকে নিরাপদ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানের সবাই সুস্থ আছেন। যাত্রী ও ক্রুদের কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হননি। তবে কথিত বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ‘আক্রমণাত্মক’ হওয়ায় তিনি নিহত হন।
উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারীর নাম মাহাদি বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ বিমানের নতুন উড়োজাহাজ ময়ূরপঙ্খী ১৪২ যাত্রী ও ৫ জন ক্রু নিয়ে ঢাকা থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় বিকেল সাড়ে চারটার দিকে। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায় উড়োজাহাজটি। চট্টগ্রাম হয়ে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজটি বিজি-১৪৭ ফ্লাইট হিসেবে দুবাই যাচ্ছিল।
উড়োজাহাজটিতে থাকা একাধিক ক্রু ও যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আকাশে ওড়ার পরপরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। পুরো কাজটি করেন অস্ত্রধারী এক ব্যক্তি। পাইলট ও কেবিন ক্রুরা বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ফ্লাইটটি জরুরিভাবে শাহ আমানতে অবতরণ করান।